অধ্যাপক ডঃ হারুন রশীদ-এর কবিতা “বন্ধুত্বের স্মৃতিগাথ”
বন্ধুত্বের স্মৃতিগাথা
অধ্যাপক ডঃ হারুন রশীদ
বিনম্র শ্রদ্ধা, সুগভীর ভালোবাসা
তোমার স্মৃতির মিনারে
বন্ধুবর আবু জামিল জীবন,
তুমি চলে গেলে
রেখে গেলে বন্ধুত্বের
অমর সব ধ্রুপদী স্মৃতি।
তোমার হৃদয় উৎসারিত
আবেগ মিশ্রিত “বন্ধু” ডাক
আমি শুনতে পাই
কান পেতে থাকি সারাক্ষণ,
তুমি নেই অথচ আছ
দ্বান্দ্বিকতার নিয়মে হৃদয়ের গভীরে।
তোমাকে নিয়ে আর কোনো
শোকগাথা রচনা করতে চাই না,
শোনাতে চাই বন্ধুত্বের স্মৃতিগাথা
আর ভালো লাগার কথামালা।
ভুলে যেতে চাই
অস্বস্তিদায়ক করোনাবিধ্বস
তথাকথিত নিউ নরমাল বাস্তবতা-
ভ্যাক্সিন বানিজ্যের দীর্ঘসূত্রিতা,
দ্বিতীয় ঢেউ ছাড়িয়ে
তৃতীয় ঢেউয়ের সম্ভাবনাময়
আলাপ-বিলাপ আর
এলোমেলো অর্থহীন প্রলাপ।
বন্ধু তোমায় মনে পড়ে
বড় বেশি মনে পড়ে-
কত শত স্মৃতিকথা
ভালো লাগে সেসব স্মৃতি হাতড়াতে,
মনে পড়ে তোমার সাবলীল লেখা
শ্রমজীবী মানুষের মুক্তির বারতা,
চিন্তা উদ্রেককারী
সক্রেটিসীয় দার্শনিক অনুসন্ধান-
আমার মস্তিষ্কের গুগল ড্রাইভে
যা নাড়া দেয় সারাক্ষণ,
ভাবনার খোরাক যোগায়
করোনাকালীন ডিজিটাইলজড
চিন্তন প্রক্রিয়ায়,
অতঃপর উর্বর প্রশ্ন জাগিয়ে
তোলপাড় সৃষ্টি করে
আমার অনুর্বর মস্তিষ্কে।
ভালো লাগে না
স্মৃতির ভাবনা ছাড়া অন্য কিছু,
ভালো লাগে শুধু
বন্ধুর রেখে যাওয়া
মধুর স্মৃতিগুলো,
ভালো লাগে
হৃদয়ের গভীরে পুষে
মেমোরি কার্ডে স্মৃতি রোমন্থনে।
ভালো লাগে না
বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতো
বন্ধুর অপ্রত্যাশিত অনুপস্থিতি,
দিনে দিনে বাড়ছে
কষ্টের বোঝা
প্রসারিত হচ্ছে ক্লান্তিকর মুহুর্ত-
সেকেন্ডের কাটাগুলো মন্থর গতিতে
স্নায়ুপথে ভ্রমণ শেষে
মিনিটের কাটায় কষ্টের বেরি পড়িয়ে
হৃদয়তন্ত্রীতে ঘণ্টাধ্বনির হাতুড়ি চালায়।
খুচরা যন্ত্রাংশ নির্মিত
এই নিষ্প্রাণ জড় দেহে
রোবট সদৃশ অবয়বে,
অথবা মনুষ্য প্রজাতির হাবভাবে
সিপিইউ নির্ভর মন-মস্তিষ্কে
কার্তেসীয় শীর্ষক গ্রন্থীর ইমেইজে,
নিমগ্নচিত্তে ঘুরেফিরে শুধু
রচনা করি বন্ধুত্বের স্মৃতিগাথা।
(লেখক: দর্শন বিভাগ চেয়ারম্যান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়)