প্রচ্ছদ

মরমি কবি ইবরাহীম তশ্না, পর্ব-৩

  |  ১৩:২৭, সেপ্টেম্বর ০৬, ২০২১
www.adarshabarta.com

:: নন্দলাল শর্মা ::
আল্লাহ স্মরণ বিষয়ক গীতি সংখ্যা ২৫ টি। মরমি কবি ইবরাহীম তশ্না বিশ্বের সর্বত্র দয়াল রব্বানি আল্লাহর জয়ধ্বনি শুনতে পেয়েছেন। আকাশে ও পাতালে তাঁর মহান নামের জয়ধ্বনি। আমরা ইহজগতে যাদের বন্ধু বলে জানি তারা প্রকৃত বন্ধু নয়। কবির ভাষায়;
যারে ডাকি বন্ধু বন্ধু ফিরায়ে নয়ন
হয় জানের দুশমন- হায় হায়
অসময়ে তুমি কেবল বন্ধু দয়াল রব্বানি।
( গীতি সংখ্যা ১৯)
ইহকাল ও পরকাল উভয় কালেই একমাত্র আল্লাহই পরম বন্ধু। তিনি ‘দয়াধর, দয়ার নাথ, অসীম সায়র দয়ার’। তিনি দয়ার ঠাকুর, রহিম ও করিম। তাই কবি বলেন, “তুমি বিনে আর কে আছে আমায় করিতে উদ্ধার”। (২৭) তিনি স্মরণ করেছেন যে দয়াল আল্লাহর রহমতে হজরত নূহ (আ.)-এর নৌকা তুফানে নিস্তার পেয়েছে। এভাবে অনেকেই আল্লাহর দিদার লাভ করেছেন। তিনি এ জগৎকে অগ্নিকু-ের সঙ্গে তুলনা করেছেন। কারণ এখানে চারদিকে পাপ-তাপ।
উদাসী তশ্নায় বলে অগ্নিকু-ে বসি
জ্বলন্ত আগুন্নির মধ্যে কী সন্ধানে বাস করি।
(গীতি সংখ্যা ২৮)
এই অগ্নিকু- থেকে মুক্তিলাভের জন্য কবি আল্লাহর কৃপা প্রার্থনা করেছেন। করিম ও রহিম নাম শুনে তিনি তাঁর দরজায় দাঁড়িয়ে আছেন। কবি জানেন ভবকুলের মায়া অসার। সঙ্কটকালে একমাত্র মাবুদ বিনে কেউ দয়া করে না। কবির কামনা হলঃ
যেই গুলের নূরে আমার মাজিয়াছে মন
সুভাগ্যেনি মরণ কালে হইব দরশন।
(গীতি সংখ্যা ৪২)
কবি ইবরাহীম তশ্না তাঁর বিভিন্ন গানে আল্লাহর গুণগান করেছেন। ‘বিষম সঙ্কট’ বা ‘মহা মসিবত’ থেকে পরিত্রাণ লাভের আশায় তিনি আল্লাহকে স্মরণ করেছেন। তিনি বিশ্বাস করেন;
আসমান জমিন ভরি পাপ কেহ করে যদি
ক্ষমা কর তারে তুমি যদি ডাকে একবার।
(গীতি সংখ্যা ২৯৮)
লেখক: নন্দলাল শর্মা অধ্যাপক ও গবেষক
তথ্যপঞ্জি
আশরাফ সিদ্দিকী: লোক সাহিত্য হয় খ-, ঢাকা ১৯৯৫
গুরুসদয় দত্ত ও নির্মলেন্দু ভৌমিক সম্পাদিত : শ্রীহট্টের লোকসঙ্গীত, কলিকাতা ১৯৬৬
নন্দলাল শর্মা সম্পাদিত : বাঁশির সুরে অঙ্গ জ্বলে, সিলেট ২০০৭, : মরমী কবি শিতালং শাহ, ঢাকা ২০০৫
মুহম্মদ এনামুল হক : —– সূফী প্রভাব, ঢাকা ২০০৬
সৈয়দ মোস্তফা কামাল : সিলেটের মরমী সাহিত্য, লন্ডন ১৯৯৮
হরেন্দ্র চন্দ্র পাল : পারস্য সাহিত্যের ইতিহাস, কলিকাতা ১৩৬০