প্রফেসর ড. হারুন রশীদ–এর কবিতা “করোনা কাব্য-১৪”
প্রফেসর ড. হারুন রশীদ
অসম্পূর্ণ করোনা প্যাচাল-৫
(সকল ফেইসবুক বন্ধুদের প্রতি উৎসর্গীকৃত)
প্রিয় ফেইসবুক বন্ধুরা,
আপনারা হয়তো ভাবছেন-
আমি কবিতা লিখি
আথবা দার্শনিক কাব্য রচনা করি,
আমি কিন্তু কোনো কবিতা লিখি না
এমনকি দার্শনিক কাব্যও নয়,
আমি কবিতা লিখতে চাই না
কিন্তু মনের অজান্তেই-
ভাবনাগুলো কল্পনার জাল বুনে
কথাশিল্প হয়ে প্রিয়তমার স্পর্শানুভূতিতে
কীভাবে যেন দার্শনিকের পোশাকে
কবিতার আদলে সজ্জিত হয়,
সত্যি বলছি আমি কবিতা বুঝি না
আমি কেবল ভাব আর অনভূতি নিয়ে
নাড়াচাড়া করি অথবা বড়জোর
করোনা প্যাচাল শোনাই।
মাফ করবেন প্রিয় পাঠকগণ,
আপনারা আমাকে বাহবা দিচ্ছেন
আর আমি পুলকিত বোধ করছি,
আসলে কিন্তু আমি কবিতা লিখি না
আমি অসম্পূর্ণ করোনা প্যাচাল
সম্পূর্ণ করতে চাই,
আমি বাস্তবের সাথে
ভাব ও কল্পনার সংমিশ্রণ ঘটাই,
জীবনের অনুভূতি ও উপলব্ধিগুলো
নিজের মতো করে বলতে চাই-
এই বলতে চাওয়াটাই অবশেষে
হয়ে ওঠে করোনা কাব্য,
নানা রূপে তা অভিব্যক্ত হয়,
কখনো গদ্যে
কখনো বা পদ্যে
আবার কখনো শৈল্পিক ঢঙে।
কবিতার কোনো বাধাধরা নিয়ম
অথবা কোনো ব্যাকরণ আছে কি না
এমনটা জানা নেই আমার,
প্রথাসিদ্ধ কোনো স্টাইল
এতে অনুসৃত হয় কি না
তেমনটাও আমার আজানা-অজ্ঞাত,
তবে আমি অজ্ঞেয়বাদী নই-
আমি শুধু কল্পনার রাজ্যে বিচরণ করে
ভাব-ভাবনা ও অনুভূতি প্রকাশ করি,
যা একটা কিছু হয়ে ওঠে-
এই হয়ে ওঠাটাই শব্দতরঙ্গ সৃষ্টি করে,
যা দিয়ে আমি কথার মালা গেঁথে
ছন্দের জাল বুনি,
অতঃপর ভাষাকে শিল্পের আবরণে
নান্দনিক আবহে সুশোভিত করে
ভাবনার জগতে ঘুরে বেড়াই।
আবারও বলছি আমি কবিতা লিখি না-
তবে কবিতা আমার ভালো লাগা
প্রিয়তমার ভালোবাসার পংক্তিমালা,
কবিতা আমার কল্পিত ভালোবাসার ভাবনা,
আমার কল্পিত ভাবনাগুলো
তরঙ্গায়িত হয়ে ভেসে চলে
মুক্ত বিহঙ্গের মতো,
নানা রঙে নানা বর্ণে
কাব্যরূপে তা প্রস্ফুটিত হয়-
কখনো তা অর্থবহ হয়ে
অর্থত্তত্বের নতুন বয়ান শোনায়,
কখনো আবার অর্থহীন হয়ে
অস্পষ্টতা ও দুর্বোধ্যতার জালে
জড়িয়ে-পেচিয়ে
ভাবনাগুলো এলোমেলো করে দেয়,
অবশেষে ফিরে আসি
পুরোনো ফর্মে নতুন দান্দ্বিক ভাবনায়-
কাব্যহীন কাব্যের অসম্পূর্ণ করোনা প্যাচালে।
(অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান, প্রফেসর ড. হারুন রশীদ, দর্শন বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।)