করোনা শনাক্তের ৩ মাস, পিক টাইমে বাংলাদেশ
মোঃ নাসির, বিশেষ প্রতিনিধি :
নভেল করোনাভাইরাসে(কভিড-১৯) আক্রান্ত হয়ে দেশে এক সপ্তাহে মারা গেছেন প্রায় আড়াইশ রোগী। মে মাসেই মৃত্যু হয়েছে ৪৮০ জনের। রোগতত্ত্ববিদরা বলছেন, সংক্রমণের পিক টাইম বা পঞ্চম স্তরে প্রবেশ করেছে দেশ। গত ৮ মার্চ প্রথম তিনজন শনাক্তের পর থেকে তিন মাসে সারা দেশে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে প্রায় ৬৫ হাজার।
দেশে করোনাভাইরাস শনাক্তের প্রথম খবর আসে আট মার্চ। আক্রান্ত হন তিন জন। এপ্রিল শেষে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ায় ৭৬৬৭ জন। আর মে মাসের শুরুতে সংখ্যা ১০ হাজার থেকে ৩১ মে’তে গিয়ে আক্রন্তের সংখ্যা স্পর্শ করে ৪৭ হাজারে। এক মাসেই আক্রান্ত হয়েছেন ৩৮ হাজারেরও বেশি রোগী। জুনের প্রথম সপ্তাহেই ১৮ হাজার ৬১৬ জনের শরীরে পাওয়া যায় করোনারভাইরাস।
মৃত্যুর পরিসংখ্যানের গ্রাফটাও গত দুই মাসে ঊর্ধ্বমুখী। ১৮ মার্চ প্রথম একজনের মৃত্যু হয়, ২০ এপ্রিল মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়ায় ১০১ জনে। মে মাসে সংক্রমণের মাত্রা বাড়তে থাকে। মৃত্যু ১৭০ থেকে সাড়ে ছয়শতে পৌঁছায়। আর জুনে আরো ভয়ংকর রূপ নেয় করোনা । প্রথম সপ্তাহেই ২৩৯ জনের মৃত্যু হয়। মে মাসে মৃত্যু হয়েছে ৪৮০ জনের । এ পর্যন্ত দেশে করোনায় মারা গেছেন ৮৮৮ জন।
এ বিষয়ে আইইডিসিআরের উপদেষ্টা মুশতাক হোসেন বলেন, এই সময়ে সাধারণ ছুটি ও সামাজিক দূরত্বের নিয়ম ঠিকমত পালন না করায় সংক্রমণ বেড়েই চলেছে।
১৫ জুনের পর আর বাড়ছে না সরকারি ছুটি। সংক্রমণের গুরুত্ব দেখে সারা দেশকে লাল, হলুদ, সবুজ তালিকা করে লকডাউন করা হচ্ছে। এরই মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে গণপরিবহন চালু হলেও তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতালের পরিচালক উত্তম কুমার বড়ুয়া বলেন, জুনের প্রথম সপ্তাহেই প্রায় আড়াইশ জনের মৃত্যু আতংকের বিষয়। আবার মারা যাওয়াদের বেশীর ভাগের বয়স ৫০ বছরের বেশি। সংক্রমণের পঞ্চম স্তরে পিক টাইমে প্রবেশ করেছে দেশ।
মার্চ থেকে নব্বই দিনে সারা দেশে ৫২টি ল্যাব স্থাপন করায় নমুনা পরীক্ষা বেশি হচ্ছে। তাই সংক্রমণের সংখ্যাও জানা যাচ্ছে। আক্রান্ত ও মৃত্যুর হিসাবে এশিয়ার ভারত, ইরান, চীন, পাকিস্তান, কাতারের পরেই রয়েছে বাংলাদেশ। সংক্রমণের তালিকায় ২০ নম্বরে উঠে এসেছে দেশ।