আমরা এক আজব জাতি!
মানুষিকতা বদলান শুধু জীবন নয়,পুরো দেশটাই বদলে যাবে।
:: মোঃ শফিকুল ইসলাম ভূইয়া ::
মদ বিক্রেতাকে কেউ জিজ্ঞেস করে না মদে পানি মিশিয়েছে কি না! কিন্তু দুধ বিক্রেতাকে ঠিকই সন্দেহ করে পানি মিশিয়েছে ভেবে। আকিজ গ্রুপ এদেশে ৮০ বছর ধরে বিড়ি বানিয়ে যাচ্ছে কেউ বাধা দেয়নি, অথচ যখন করোনা রোগীদের জন্য হাসপাতাল বানাতে গেলেন তখন এলাকার লোকজন ঠিকই বাধা দিলেন। কেউ সরকারি চাকরি না পেলে ভাবি তার যোগ্যতা নেই। আবার কেউ চাকরি পেয়েছে শুনলে জিজ্ঞেস করি- ঘুষ কত দিতে হয়েছে? আমাদের মানসিকতা নেগেটিভ ভাইরাসে ভরপুর।
কেউ সাহায্য না করলে নিষ্ঠুর বলি। আবার কেউ আগ বাড়িয়ে সাহায্য করতে এলে সন্দেহ করি – লোকটার মতলব কী! আপনি কম দামি মোবাইল ইউজ করলে লোকে ডাকবে কৃপণ। আর দামী সেট ইউজ করলে মুখে ভেংচি কেটে বলবে- ফুটানি কত! আমরা কাউকে না আগাতে দেই, না পেছনে থাকা ব্যক্তিটাকে শান্তি দেই।
দূর এলাকার ছেলেটি গুগলে জব করছে শুনলেও বিশ্বাস করি অথচ পাশের ঘরের ছেলেটি গুগলে জব করার প্রিপারেশন নিচ্ছে শুনলেও ভাবি চাপাবাজি। কারণ আমাদের ধারণা সফল ব্যক্তিরা পাশের গ্রামে জন্মায়, পাশের এলাকায় জন্মায় কিন্তু নিজের ঘরে জন্মায় না। আজ আপনি একটা গুছিয়ে রোমান্টিক লেখা দিয়ে স্ট্যাটাস দেন, লোকে ভাববে হুমায়ুন আহমেদের বই থেকে কপি মারছেন। আর ফেসবুকে উল্টাপাল্টা কিছু লিখলে লোকে ঠিক বিশ্বাস করে নিবে এটা আপনিই লিখেছেন। কাছের মানুষ যে ভালো কিছু করতে পারে তা বিশ্বাস করাটাই অনেকের কষ্ট হয়।
ফিল্টার করা বিশুদ্ধ পানি খেতে লাগে এক টাকা, আর পাবলিক টয়লেটে দূষিত পানি ইউজ করতে লাগে ৩ টাকা। দেশে আসলে নিষিদ্ধ জিনিসে আস্থা আর দূষিত জিনিসে বিশ্বাস আমাদের অনেক। আমরা লুকিয়ে পর্ণগ্রাফি দেখি অথচ প্রকাশ্যে দুটো ভালো উপদেশ কারো শুনি না। গরীব মানুষের চরিত্রে অভিনয় করে অভিনেতারা হয়ে যাচ্ছেন বড়লোক, অথচ সত্যিকার গরীবরা গরীবই থেকে যায়। পৃথিবীতে সত্যি জিনিসের চেয়ে মিথ্যার দাম অনেক বেশি।
লেখক: সাধারণ সম্পাদক, গাজীপুর জেলা প্রেসক্লাব।