স্মৃতির পিঞ্জিরা, পর্ব-৩
লুঙ্গি চোরের কাহিনি !
:: আবু সালেহ আহমদ ::
কলেজে পড়ার সময় একবার এক ভদ্রলোক নিয়ে ঢাকা গিয়েছিলাম। অফিসিয়াল কাজ শেষ করে এলাম গুলিস্তান। উদ্দেশ্য সস্তা মালামাল ক্রয় করা। ঘুরে ঘুরে শার্ট, গেঞ্জি সহ অনেক জিনিসই কিনলাম। শেষ দিকে এক যুবক এসে বলল স্যার তিনটি লুঙ্গি আছে নিয়ে যান, যা খুশি দেন তাড়াতাড়ি করেন। না আমরা কিনব না নেন স্যার ভাল হবে নতুন লুঙ্গি কিনব না যতই বলি সে পথ আগলে ধরে স্যার নিয়ে যান ভাল হবে স্যার। আমরা ১০০ টাকা তার হাতে দিলাম টাকা হাতে নিতেই পাশে থাকা তিনজন লোক এসে বলল এই মাদারচোদের বাচ্চা তোরে খুঁজতে খুঁজতে আমাদের লুঙ্গি চুরি করে এনে তুই বিক্রি করবি। দাঁড়া ! এমন সময় লুঙ্গি বিক্রেতা দিল দৌড় পরক্ষণে একই সুরে তিনজন বলল ধরতে পারলে….
আপনারা সস্তা পেয়ে চোর বাটপার না চিনে….।
দেন দেন লুঙি বলেই টেনে ধরল এমন সময় আরেকটি লোক এগিয়ে এসে বলল,” আরে ভাই দেন তো আরো ২০০ টাকা দিয়ে দেন”। আরেকজন এগিয়ে এসে বলল, “দেন না,, দেন দেন। অনেক কথাবার্তার পর ১৫০ টাকা দিয়ে রক্ষা পেলাম। রাতের ট্রেনে বাড়ি এসে ঘুম থেকে উঠে ব্যাগ থেকে লুঙ্গি গুলো বের করে আশ্চর্য হলাম, কি যে আকাল দুনিয়া রে ভাই, পুরাতন ছেঁড়া লুঙ্গিকে ভাতের ফেনের সাথে রং লাগিয়ে ইস্ত্রি করে পাঁচভাই লুঙ্গির মোড়ক লাগিয়ে কি না অভিনব পন্থায় বিক্রি করে গেল।
প্রথম লুঙ্গি বিক্রতা ও ছিল একই গ্রুপের লোক। হায়রে মানুষ! টাকার জন্য এই প্রতারণা। জীবনে এই প্রথম ফাঁদ পাতা ভুবনের নিরব সাক্ষী হয়ে রইলাম। (চলবে)।
লেখক: কবি, কলামিস্ট ও লোক গবেষক।