রফিকুল নাজিম-এর কবিতা
পাথুরে ভাস্কর্য হয়ে সড়কে দাঁড়িয়ে যান
রফিকুল নাজিম
মাননীয় সুবোধ,
এবার আপনার এই কাগুজে লেফট রাইট
বন্ধ করুন
প্যারেড গ্রাউন্ডে ড্রামের তালে নির্বোধ হয়ে
যান সদলে
নির্বোধ হলেই আপনার ভাগ্যে জুটবে
গ্যালারির করতালি
হুজুগে দর্শকের বাহবা ও ধারাভাষ্যকারের
মুখস্থ স্তুতি!
মাননীয় দেশপ্রেম,
এবার থামেন। আমাকে কাতুকুতু দিয়ে
কোনো লাভ নেই।
ইদানিং দেশপ্রেম শব্দটা প্রাচীন সেই
সভ্যতার মুদ্রার মত
পকেটে ঝনঝন করবে ঠিক; কিন্তু তার
বিনিময় মূল্য শূন্য!
কেউ কেউ বলেন- ত্রিশ লক্ষ আত্মাও
নাকি বোকা ছিলো!
অথচ তাঁরা কত সহজে প্রাণকে সঁপেছিল দেশপ্রেমের হাতে
কী রকম সূক্ষ্মতম বোধের আগুনে খইয়ের
মত ফুটেছিল
কত সহজিয়া ভাষায় গাইতেন মায়ের জন্য
ও মাটির জন্য
অথচ কি দৃঢ়তায় ইস্পাত মুখে শ্লোগান
দিতেন ‘জয় বাংলা’!
মাননীয় কবি,
বরফ চোখে আর কতদিন দ্যাখবেন এই
বঙ্গদেশে রঙ্গলীলা
ধর্ষিতার যোনি থেকে ঝরে পড়া রক্ত
আপনাকে কষ্ট দিবেই।
আমি হলফ করে বলতে পারি আপনি
বেশ লজ্জিত হবেন;
যখন দ্যাখবেন তৈল মালিশ চর্চায়
দারুণভাবে সব বশ হচ্ছে
যখন দ্যাখবেন ভোগের পূজো পাচ্ছে
পাতিনেতা ও মস্তানেরা
হাসপাতালগুলো কসাইখানা,
পাঠশালাগুলো বিপণী বিতান।
টাউট বাটপার গিলে খাচ্ছে স্বাধীনতার
সেই প্রতীক্ষিত ফল
সাত্ত্বিক সন্ন্যাসীরা গিলে খাচ্ছে একাত্তরের
সেই ইশতেহার!
মাননীয় আমজনতা,
এবার আপনাদের চোখ সেই ভাস্কর্যের
চোখের মত হোক
এবার আপনাদের মুখ পাথরে ঠাসা
নির্বাক মুখ হয়ে যাক
আপনাদের মাথা হোক নিতান্তই
একটুকরো পাথরের খন্ড
অতঃপর পাথুরে ভাস্কর্য হয়ে পিচঢালা
সড়কে দাঁড়িয়ে যান!
(পলাশ, নরসিংদী।
০১৭১৬৩৮৩৪৩৮)