প্রচ্ছদ

কপালে যে লেগেছে দাগ সে লাজ রাখি কোথায়?

  |  ১৬:৫৯, জুলাই ২৪, ২০২০
www.adarshabarta.com

:: কাজী শাহেদ বিন জাফর ::

কোভিট-১৯ নিয়ে সারা পৃথিবী জুড়েই আজ ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা বিরাজ করছে। কখন যে কার প্রাণ কাড়ে। মৃত্যুর মিছিল বহে চলছে দুনিয়া জুড়ে। মরছে মানুষ দেদারসে, দুনিয়ার প্রতিটি প্রান্তে। সঠিক হিসেব তুলে আনার উপায় মিলছে না গণমাধ্যমে। একমাত্র হসপিটালাজ ছাড়া। এ ছাড়া প্রত্যন্ত অঞ্চলে আক্রান্তের সংখ্যা ও মৃত্যুর পরিমাণ কতো সে খবর আর কে রাখে?
এসব আল্লাহর উপর ভরসা ছাড়া কোনো উপায় নেই। আর অনেকই টেস্ট ও রোগ চাপা দিয়ে রাখছে হসপিটালিটির ভয়ে। এরই মধ্যে কিছু মানুষ রুপি অমানুষ করোনাকে কেন্দ্র করে নির্লজ্জ বেহায়া ও জাতীয় বেঈমানদের মতো হায়নাবাজি ব্যবসায় মেতে উঠেছে। তাদের নাম বলতেও ঘৃণা হয়। সমাজে ভালো মানুষি রুপ দেখিয়ে রাষ্ট্র ও জনসাধারণের সাথে প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে দেশের সুনাম ও অগ্রগতি ক্ষুন্ন করে চলছে। নষ্ট করে চলেছে, বহির্বিশ্বে দেশের সুনাম। তাদের মধ্যে প্রতারক জগতের মাফিয়া ডন শাহেদ করিম। তার প্রতারণার জাল ছড়িয়ে ছিলো দেশের সকল ক্ষেত্রে সর্বত্র। শেষমেষ রিজেন্ট হাসপাতালে করোনা ভাইরাস নিয়ে রোগীদের সাথে যে প্রতারণা ও জালিয়াতির বুনেছেন। এতেই তিনি ধরা পরেন তার পাতানো ফাঁদেই। ফলে বেরিয়ে আসে প্রতারণা ও জালিয়াতির সকল উৎস। যদিও হোতারা ধরা ছোঁয়ার বাহিরে থাকলেও আমাদের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যার নির্দেশ রয়েছে “অপরাধি যে কেউ হোক না কেন আইনের আওতায় আনতেই হবে”। আশা করি হোতারা যতই ক্ষমতাধর হোক না কেন তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। সাবরিনাদের মতো যারা মানুষের সেবার নামে করোনা কে কেন্দ্র করে চিকিৎসার নামে অর্থ উপার্জনে প্রতারণা ও জালিয়াতির জাল বুনেছেন। একের পর এক বেরিয়ে আসতেছে। যেমন মাক্স নিয়ে দুর্নীতি, করোনা ভাইরাসের চিকিৎসা নিয়ে দুর্নীতি, ত্রাণ নিয়ে দুর্নীতি। তথা আমাদের প্রায় সকল সেক্টরে দুর্নীতির লগ্ন ভ্রষ্টা লেগেই আছে। এদের দুর্নীতির কারণে আজ বহির্বিশ্বে দেশের সুনাম হারাতে বসেছে। তার জলন্ত প্রমাণ ইতালি থেকে বিমানের সকল বাংলাদেশী যাত্রীকে সেদেশে ঢুকতে না দিয়ে দেশে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে। অথচ তারা সে দেশের বৈধ ওয়ার্ক পার্মিটধারি ও বৈধ অভিবাসী ছিল। সেই লাজ রাখি কোথায়?
এছাড়াও আমাদের দেশের একজন নির্বাচিত সংসদ সদস্য কাজী শহিদুল ইসলাম পাপুল দুর্নীতি ও মানব পাচারকারি হিসেবে কুয়েত কারাগারে বন্ধি রয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চেয়ারম্যান ডা. আবু সাইদকে ঈশ্বরদী থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রিক্যুইজেশনে। করোনা কালিন দুর্নীতি ও অপচিকিৎসার কারণে সাবরিনা- আরিফকেও গ্রেফতার করা হয়েছে।
এদিকে, লেখা না বাড়িয়ে আমি বলতে চাই। যাদেরকে দুর্নীতির দায়ে ধরা হয়েছে তাদের বিচার রাষ্ট্রীয় আইনে সাজা-শাস্তিতো হবেই। তা’ সূর্য আলোকের মতো স্পষ্ট। যা আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ রয়েছে অপরাধী যে দলেরই হোক না কেন, কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। অভিযান চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। একারণে তিনি আজ জন নন্দিত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আসিন হয়েছেন। মূল উদ্দেশ্যে চলে আসি, শাহেদের মতো অনেকে অনেক শাহেদরা আমাদের চার পাশে এখনো ধরা ছোঁয়ার বাইরে রয়েছে। তাদেরকে খুঁজে খুঁজে বাহির করে আইনের আওতায় আনা উচিৎ নয় কী? সাথে সাথে তাদের সহযোগি অর্থাৎ গডফাদারদের আইনের আওতায় এনে জবাব দিহিতার একান্ত প্রয়োজন মনে করি। দুষি হলে তাদেরকেও দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির আওতায় আনা উচিৎ। অন্যতায় এই কুলাঙ্গারদের কারণে দেশের সুনাম বহির্বিশ্বে নষ্ট হতে বসেছে। শুধু তাই নয়, আমাদের উন্নয়ন শীল মধ্য আয়ের দেশটি আজ বিশ্বে দুর্নীতি পরায়ন যে কয়টি চিহ্নিত দেশ রয়েছে, তাদের তালিকায় শীর্ষ স্থান দখল করে নিতে পারে!
তাই আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আকুল আবেদন। দুর্নীতিবাজ ও জালিয়াতির সকল সেক্টর সমূলে বিনাশ করা অতিব প্রয়োজন মনে করি। কারণ আমাদের নিম্ন আয়ের দেশটি আজ আপনার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বিশ্ব দরবারে মধ্য আয়ের দেশ হিসেবে স্থান করে গৌরবময় সিঁড়ি নির্মান করতে পেরেছেন। যা আর কোনো সরকার দিতে পারেনি। এটা আমাদের গৌরবের বিষয়। এই উন্নতির যাত্রা শুরুর পথে খাল হয়ে দাঁড়িয়েছে কিছু অর্থ লিপ্সু, জাতীয় বেঈমান। জাতি তাদের উচিৎ বিচার চায়।

লেখক: কবি, প্রাবন্ধিক, সাংবাদিক।