রাজলক্ষ্মী মৌসুমী-এর কবিতা ’খেলাঘর’
খেলাঘর
রাজলক্ষ্মী মৌসুমী
তোমার মনে পড়ে?
একদিন খেলার ছলে সেই যে খেলাঘর বেঁধেছিলে?
মনে পড়ে তোমার?বেমালুম ভুলে গেছো তুমি তাইনা?
আসলে মেঘে মেঘে অনেক বেলা হলো যে।
আমি কিন্তু ভুলিনি।
সমুদ্র তটের বালুচরের খেলাঘরটি আজো
আমায় হাতছানি দিয়ে ডাকে।
কী অদ্ভুত সৃষ্টি তোমার আমার দুজনার
খেলাঘর।
মনে পরে তোমার? সে ঘরের ছাওনি
দিয়েছিলাম
আমাদের ভালোবাসার আচ্ছাদন দিয়ে?
ঘরের প্রধান দরজাটা ছিলো
তোমার আমার বাহুডোরের বাঁধনে।
প্রাণের উচ্ছ্বাসের রসধারায় কারুকাজ
করেছিলে তুমি। আমি আনন্দের অশ্রু দিয়ে বাতায়নে জলের ঝর্নাধারায় সৃষ্টি করেছিলাম বারিধারা।
শিশিরে আর আমার অশ্রু জলে মিলেমিশে
মনের কালিমা সব মুছে দূর করে দিলাম।
বিন্দু বিন্দু ভালোবাসার ছোঁয়ায়
রচনা করেছিলাম বাসর ঘর।
জোনাকীরা এসে আলো দিতে ভীর জমায়।
প্রকৃতির সমীরণে কী দারুণ হৃদয়ের উষ্ণতা।
সেই বালুচরে হেমন্তের লাল টকটকে
চাঁদের প্রতিবিম্বটি খেলাঘরে আলোরচ্ছটায়
মুখরিত করেছিলো। কী যে অপূর্ব দৃশ্য!
হৈমন্তিক চাঁদের আলোর নিশিথে দুজনেই
বেমালুম ভুলেছিলাম এ যে খেলাঘর।
একবারও মনে হয়নি খেলার ছলের কাল্পনিক বাসর রচনার খেলাঘর এটি।
এক সময়—-
সমুদ্রের অস্থির ঢেউ একের পর এক
জলরাশির ঝাপটায় আমাদের খেলাঘরটি
ভেঙ্গে চুড়মার করে দিলো।
কিন্তু আমি কিছুই হারাইনি।
ভাগ্যের রূপকার আবার রূপায়িত করলো
মিলনের মোহনায় দুজনাকে।
বার বার রচিব বালুকাময় এ খেলাঘর।।