সৌদি আরবে ‘দেশ গঠনে বঙ্গবন্ধুর সাড়ে তিন বছর’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত
মোঃ নাসির, বিশেষ প্রতিনিধি :
সৌদি আরবের রিয়াদে বাংলাদেশ দূতাবাসে মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে ‘দেশ গঠনে বঙ্গবন্ধুর সাড়ে তিন বছর’ শীর্ষক এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেমিনারে রিয়াদের বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার অভিবাসীরা ও দূতাবাসের কর্মকর্তারা অংশ নেন। সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী গতকাল বুধবার দূতাবাসের অডিটরিয়ামে সেমিনারের শুভ উদ্বোধন করেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, মুজিব শতবর্ষ উদ্যাপন উপলক্ষে সৌদি আরবে বসবাসরত অভিবাসীদের মাঝে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ও আদর্শ সম্পর্কে জানার সুযোগ সৃষ্টি করতে এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছে। তিনি বঙ্গবন্ধুর শাসনামলে দেশ গঠনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন উল্লেখযোগ্য বিষয় তুলে ধরেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, বঙ্গবন্ধু ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি স্বাধীন বাংলাদেশে ফিরে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব শুরু করেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সদ্য স্বাধীন দেশে মাত্র তিন বছর সাত মাস দেশ পরিচালনার সুযোগ পেয়েছিলেন। তাঁর মধ্যে তিনি বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়নের জন্য সূদুরপ্রসারী পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন।
একটি দেশ সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য, বাঙালির হাজার বছরের লালিত স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য, মুক্তিযুদ্ধের চেতনানির্ভর একটি সময়োপযোগী আধুনিক রাষ্ট্র তথা সোনার বাংলা গঠনের জন্য সম্ভাব্য সব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। দেশের প্রথম সংবিধান প্রণয়ন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও ক্ষমতার পৃথক্করণ বিষয়ে বঙ্গবন্ধুর অবদান বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ রূপরেখা তৈরির মূল ভিত্তি হিসেবে কাজ করেছে। রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধু সমার্থক শব্দ। বাংলাদেশকে জানতে হলে বঙ্গবন্ধুকে ভালোভাবে জানতে হবে। তিনি ‘বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ ও ‘কারাগারের রোজনামচা’ বই দুটি পাঠের পরামর্শ দেন। রাষ্ট্রদূত বলেন, বঙ্গবন্ধুর সমগ্র জীবনের স্বপ্ন ছিল দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানো। জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন অব্যাহত রাখা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে কাজ করে চলেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে ভিশন ২০২১ ও ভিশন ২০৪১ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ একটি উন্নত সমৃদ্ধিশালী দেশ হিসেবে গড়ে উঠবে ও বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়িত হবে বলে রাষ্ট্রদূত আশা প্রকাশ করেন।
সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন দূতাবাসের মিশন উপপ্রধান এস এম আনিসুল হক। মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন দূতাবাসের মিনিস্টার ও কার্যালয়প্রধান ফরিদ উদ্দিন আহমদ। প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন অভিবাসী প্রকৌশলী মোয়াজ্জেম হোসেন, মো. আবদুস সালাম, এম আর মাহবুব, মো. রেজাউল করিম ও এ টি এম জিয়াউদ্দীন। সেমিনার সঞ্চালনা করেন দূতাবাসের প্রথম সচিব মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম।
সেমিনার শেষে রাষ্ট্রদূত দূতাবাসের কনস্যুলার সেবা চত্বরকে বঙ্গবন্ধু চত্বর ঘোষণা করেন ও তা উদ্বোধন করেন। এ চত্বরে বঙ্গবন্ধু মঞ্চ, বঙ্গবন্ধু কর্নার, বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন সময়ের ছবি প্রদর্শন ও মুজিব শতবর্ষের লোগো স্থাপন করা হয়েছে।