যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বৃহৎ তুষার ঝড়ে জনজীবন বিপর্যস্ত
মোঃ নাসির, নিউ জার্সি (আমেরিকা) প্রতিনিধি :
যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে চলতি বছরের প্রথম বৃহৎ তুষার ঝড়ে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। স্থানীয় সময় সোমবার ভোর থেকে শুরু হওয়া তুষার ঝড় চলবে মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত।
নিউইয়র্কসহ পার্শ্ববর্তী বেশ কয়েকটি অঙ্গরাজ্যে দেড় ফুটেরও বেশি বরফের স্তরে ঢেকে যেতে পারে বলে আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন। আট ঘণ্টার লাগাতার তুষারপাতে ইতোমধ্যে অন্তত শতাধিক সড়ক দুর্ঘটনার খবর পাওয়া গেছে।
রাস্তায় যানবাহন আটকে আছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, অফিস বন্ধসহ বহু বিমানের সময়সূচি বাতিল করা হয়েছে। চলতি বছরে এটাই প্রথম বড় তুষারপাত বলে স্থানীয়রা উল্লেখ করেছেন।
ভয়াবহ এই তুষারপাতের পূর্বাভাসের পরই নিউইয়র্ক নগরের মেয়র বিল ডি ব্লাজিও গতকাল জরুরি অবস্থা জারি করেন। তিনি এই ঝড়কে ‘খুবই ভয়াবহ’ বলে উল্লেখ করেছেন। এ সম্পর্কিত বিবৃতিতে মেয়র বলেন, সবাই ঘরে থাকুন। রাস্তা পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করুন, যাতে জরুরি সেবা সবার কাছে পৌঁছে দেয়া যায়। কোনো ভুল করবেন না। এই ঝড়ের কারণে ভারী তুষারপাত হবে, যা চলাচলের রাস্তাকে বিপজ্জনক করে তুলবে।
আবহাওয়া কর্মকর্তারা জানান, বাফেলো নগরীর অনেক এলাকা ইতোমধ্যে এক ফুট বরফের নিচে ঢাকা পড়েছে। তুষারপাতের কারণে পশ্চিম নিউইয়র্কের বেশ কিছু শহরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও অফিস বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। শহরের রাস্তা-ঘাট ও ঘরবাড়ি বরফে ঢাকা পড়েছে। এতে বহু লোক বিভিন্ন স্থানে আটকা পড়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের আবহাওয়া সংস্থা সেখানে আরো প্রবল তুষারপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে। তুষারপাতের সঙ্গে কনকনে ঠাণ্ডা বাতাস বাফেলোর অধিকাংশ বাসিন্দাকে ঘরের মধ্যে বন্দি করে রেখেছে। যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি রাজ্যের অর্ধেকেরও বেশি অঙ্গরাজ্যে তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নিচে নেমে গেছে। আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, এই তুষারঝড় কতটা দীর্ঘ হবে, তা এখনো নিশ্চিত নয়। তবে এটি নিউইয়র্ক নগরে সোমবার, এমনকি মঙ্গলবার পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। সবচেয়ে বেশি তুষারপাতের আশঙ্কা সোমবার স্থানীয় সময় সকাল ৭টা থেকে সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে।
ঝড় চলাকালে তাপমাত্রা অনেক কম থাকবে। তবে বাতাসের কারণে এই ঠান্ডা আরও বেশি অনুভূত হবে। এই সময়ে বাতাসের গতিবেগ সর্বোচ্চ ঘণ্টায় ৫০ মাইল হতে পারে।
সূত্রটি জানায়, তুষার ও বাতাসের কারণে এই শীত আমাদের জন্য ভয়াবহ হয়ে হাজির হবে। ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। এমনকি বিদ্যুৎহীন অবস্থায়ও থাকতে হতে পারে নিউইয়র্কবাসীকে। ঝড়ের কারণে উপকূলবর্তী এলাকায় বন্যার আশঙ্কাও আছে। দৃষ্টিপথ পরিষ্কার থাকবে না। ফলে রাস্তায় চলাচল কঠিন হয়ে পড়বে। আশা করি, সবাই এই সময়টা ঘরে কাটাবেন এবং আমাদের কোনো বাজে সমস্যার মুখোমুখি হতে হবে না।