মধ্য শাবানের রাত্রি
:: শায়েখ আহমাদুল্লাহ ::
সন্দেহ নেই, মধ্য শাবানে রাত জেগে ইবাদত ও দিনে রোযা রাখা বিশুদ্ধ হাদীস দ্বারা প্রমাণিতনয়। এই রাতে ভাগ্য নির্ধারণের বর্ণনাও বিশুদ্ধ নয়। কবর যিয়ারতে হাদীসটি আরো বেশিঅগ্রহণযোগ্য। তবে এই রাতে মুশরিক ও হিংসুক ছাড়া সবাইকে সাধারণ ক্ষমা সম্পর্কিত একটিহাসান তথা গ্রহণযোগ্য হাদীস বর্ণিত হয়েছে। সেজন্য ইবনে তাইমিয়া সহ অনেকস্কলারগন মধ্য শা‘বানের ফজীলতকে স্বীকার করেছেন।
কিন্তু এর ওপর ভিত্তি করে একদিকে দেশব্যপি যা হয় তা যেমন অগ্রহণযোগ্য–অপর দিকে ‘শবেবরাতের একটি রোযা জাহান্নামে যাওয়ার জন্য যথেষ্ঠ‘, কোনো মুসলিম শবে বরাত পালন করতেপারে না‘ ইত্যাদি মন্তব্যও সুস্পষ্ট সীমালঙ্ঘন।
আজকাল দ্বিনী বিষয়ে মন্তব্যে সাধারণ মানুষ প্রচুর পরিমাণ সীমালঙ্ঘন করে চলেছেন। এরদু‘টি কারণ দেখি আমি।
এক.উলামায়ে কেরাম ও দাঈগন, দায়িত্বশীল এবং ভারসাম্যপূর্ণ মন্তব্য থেকে এক ইঞ্চি বিচ্যুতহলে, সাধারণ মানুষ ও উৎসাহী অনুসারীদের মন্তব্যে এক হাত বিচ্যুতি ঘটবে–এটাই স্বাভাবিক।আর হচ্ছেও তাই।
দুই. কোন্ বিষয়ে কোন্ মাত্রায় মন্তব্য করতে হবে তার জন্য প্রয়োজন শাস্ত্রীয় জ্ঞান। শাস্ত্রীয়জ্ঞান ছাড়াই এখন আশংকা জনক হারে মন্তব্য ও ফতোয়ার প্রতিযোগিতা বাড়ছে। এজন্যসীমালঙ্ঘনও হচ্ছে প্রচুর পরিমানে। যার পরিণাম ব্যক্তি ও সমাজ–উভয়ের জন্য ভয়াবহ।
যে কোনো আমলের পেছনে যতক্ষণ পর্যন্ত কোনো ভিত্তি থাকে, হোক সেটা দূর্বল বা সংখ্যাগরিষ্ঠআলেমের মতে অগ্রহণযোগ্য–তবু তার ওপর আমলকারী ব্যক্তিকে জাহান্নামে পাঠানো কিংবাসরাসরি বিদআতী বলার কোনো সুযোগ নেই। পূর্বসুরী কোনো মনিষীর এরকম কোনো মানহাজপা কর্মপন্থা আমার জানা নেই।
সবচেয়ে বড় কথা হলো, চোখে খড়কুটো পড়লে যেমন আলতোভাবে যত্নসহকারে তা পরিস্কারকরতে হয়, সমাজে প্রতিষ্ঠিত কোনো ভ্রান্তি ও বাড়াবাড়ি সংশোধনেও একই পদ্ধতি অনুসরণকরতে হয়। এ ধরণের পরিস্থিতিতে শুধু ফতোয়া ও তীর্যক মন্তব্যে, নিজস্ব বলয়ের বাহবা অর্জনহয়, সমাজ সংস্কার হয় না।