প্রচ্ছদ

৯ হাজার ডলার করোনায় নিহতের পরিবার পাবে

  |  ১২:৩৩, এপ্রিল ১৮, ২০২১
www.adarshabarta.com

মোঃ নাসির, নিউ জার্সি (আমেরিকা) প্রতিনিধি :

যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া প্রত্যেকের পরিবারকে সর্বোচ্চ ৯ হাজার ডলার করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। কোনো ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার পর থেকে লাশ দাফন কিংবা সৎকার করতে যে খরচ হয়েছে, সে জন্য এই অর্থ দেওয়া হচ্ছে। এই অর্থ প্রদানের জন্য ফিমা আবেদন গ্রহণ করছে। ১২ এপ্রিল থেকে এই আবেদন চালু করা হয়েছে। নিউইয়র্কে যারা করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন, তাদের পরিবার-পরিজন কিংবা আত্মীয়স্বজনের মধ্যে যারা ওই ব্যক্তিদের মরদেহের দাফন সম্পন্ন ও যাবতীয় খরচ বহন করেছেন, সেসব মানুষকে এই সহায়তা দেওয়া হবে। তবে প্রত্যেক মৃত ব্যক্তির পরিবার কত অর্থ পাবে, সেটা নির্ভর করবে ওই ব্যক্তির দাফন কিংবা সৎকারের জন্য কত টাকা খরচ হয়েছে, তার ওপর। এটা ক্ষেত্রবিশেষে কম-বেশি হতে পারে। কিন্তু সর্বোচ্চ একজনের জন্য ৯ হাজার ডলার দেওয়া হবে। এক পরিবারের যদি একাধিক ব্যক্তি নিহত হয়ে থাকেন, তাহলে প্রত্যেকের জন্য ৯ হাজার ডলার করে দেওয়া হবে। চারজন হলে সর্বোচ্চ ৩৫ হাজার ডলার পর্যন্ত ফিমা প্রদান করবে। এ জন্য ফিমার কাছে নির্ভুল ও সঠিক তথ্য দিয়ে আবেদন করতে হবে। পাশাপাশি যে পরিমাণ অর্থ খরচ হয়েছে, ওই অর্থের মানি রিসিট লাগবে। তারা পর্যালোচনা করার পর অর্থের পরিমাণ নির্ধারণ করবে ও অর্থ প্রদান করবে।

জানা গেছে, এই অর্থের জন্য যিনি আবেদন করবেন, তাকে যুক্তরাষ্ট্রের বৈধ অধিবাসী কিংবা সিটিজেন হতে হবে। বৈধ স্ট্যাটাস নেই এমন কেউ মারা গেলেও তার জন্য বৈধ স্ট্যাটাসধারী ব্যক্তি আবেদন করতে পারবেন। মৃত ব্যক্তির এ দেশের লিগ্যাল স্ট্যাটাস যা-ই হোক না কেন, অর্থ পাওয়ার ক্ষেত্রে সেটি সমস্যা হবে না। তবে যিনি আবেদন করবেন, তাকে অবশ্যই বৈধ হতে হবে। যদি মৃত ব্যক্তির দাফনের খরচের জন্য কোনো বৈধ ব্যক্তি আবেদন না করেন, তাহলে সেই অর্থ মিলবে না।

এদিকে সরকারের পক্ষ থেকে করোনায় মারা যাওয়া মানুষের জন্য অর্থ প্রদান করার সিদ্ধান্তের বিষয়টিকে নিহতদের স্বজনেরা ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন। কারণ অনেক পরিবার রয়েছে, যে পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি করোনায় মারা গেছেন। তাদের পরিবারের এখন উপার্জনের কেউ নেই। ওই সব পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন ধরনের সাহায্য-সহযোগিতা নিয়ে চলছেন। অনেকেই নিদারুণ কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন কিন্তু চক্ষুলজ্জায় কাউকে কিছু বলতে পারছেন না। আবার কোনো কোনো পরিবারে মা-বাবা দুজনই মারা গেছেন। সেই পরিবারের সন্তানেরাও অনেক কষ্টে রয়েছেন। এই অর্থ তাদেরকে সাময়িকভাবে কষ্ট লাঘবে কিছুটা সহায়তা করতে পারে।

করোনায় মারা যাওয়া প্রবাসী বাংলাদেশিদের মরদেহ দাফনসহ সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে সহযোগিতা করেছে বাংলাদেশ সোসাইটিসহ বিভিন্ন সংগঠন। তারাও সরকারের এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। করোনায় মারা যাওয়া ব্যক্তিদের জন্য সরকারের দেওয়া অর্থ পেতে যারা আবেদন করতে চান, তারা ৮৪৪-৬৮৪-৬৩৩৩ এই নম্বরে ফোন করে বিস্তারিত জানতে পারবেন। ইংরেজি, স্প্যানিশ ভাষা ছাড়াও যারা নিজ নিজ ভাষায় কথা বলতে চান, সেটিও করতে পারবেন। এ জন্য একজন অনুবাদকের দরকার হবে। তারা অনুবাদকের ব্যবস্থা করবেন। ছুটির দিন বাদে সকাল সাতটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত ফোন করা যাবে।

গত বছরের ২০ জানুয়ারির পর যারা মারা গেছেন এবং মরদেহের ফিউনারেল খরচসহ লাশ দাফন করতে যেসব প্রক্রিয়া ও খরচ বহন করা হয়েছে, ফোনে কথা বলার সময় ওই সব রিসিট সামনে রাখতে হবে। করোনায় মারা যাওয়া ব্যক্তির এ-সংক্রান্ত- সার্টিফিকেটও থাকতে হবে। যিনি মারা গেছেন, নথিপত্রে ওই মৃত ব্যক্তির নাম থাকতে হবে।

ফিমা বলেছে, আবেদনপত্রে অফিশিয়াল ডেথ সার্টিফিকেট, মৃত্যুর স্থান, ফিউনারাল ব্যয়ের ডকুমেন্টস (রসিদ, অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার চুক্তি ইত্যাদি) যাতে আবেদনকারীর নাম, মৃত ব্যক্তির নাম, জানাজার ব্যয়ের পরিমাণ এবং জানাজার ব্যয়ের তারিখ অন্তর্ভুক্ত থাকতে হবে। বিশেষত, জানাজায় ব্যয়ের জন্য অন্যান্য উৎস থেকে প্রাপ্ত অর্থের প্রমাণ। দাফন বা জানাজায় বিমা থেকে প্রাপ্ত সুবিধা, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা, সরকারি সংস্থা বা অন্যান্য উৎস থেকে প্রাপ্ত আর্থিক সহায়তা পেয়ে থাকলে নতুন করে অর্থ পাওয়া যাবে না। চেকের মাধ্যমে কিংবা সরাসরি ব্যাংক হিসাবেও অর্থ নেওয়া যাবে। আবেদনকারী কীভাবে অর্থ নিতে চান, সেটি আবেদনের সময় উল্লেখ করতে হবে।