রাজলক্ষ্মী মৌসুমী-এর কবিতা “মাটিতে অনাসৃষ্টি”
“মাটিতে অনাসৃষ্টি”
রাজলক্ষ্মী মৌসুমী
আমরা কী ধাতু দিয়ে তৈরী জানিনা।
কী অভিনব কায়দায় বেঁচে আছি তাইনা?
মাটিতে সৃষ্টি আবার মাটিতেই
করি অনাসৃষ্টি।
দৃষ্টি যতটুকু যায় —–পাহাড় সম
আশা নিয়ে মানুষ মরীচিকার
পেছনেই ঘুরে বেড়ায়।
দ্বিধা দ্বন্ধের গোলক ধাঁধায়,
নিজেকেও মাঝে মাঝে চিনতে পারিনা ডানে বায়।
কখন কাকে গ্রাস করার সাধ,
ভিতরে ভিতরে হিংস্রতার বাস।।
পরের মাটিকে আপন করে নেই,
ভাবিনা কখনও এ-মাটি আমার নয়, একদিন তো কেড়ে নেবেই।
ভয়, ডর, ঘৃণা, সবি জলে বিসর্জন,
লজ্জা টুকুও ভেঙ্গে —-খুলে যায় আঁচলের বাঁধন।
মনের হিসাবের পাতায় কেবলি
শুধুই শূন্যতা।
আকাশের গুরুগম্ভীর ভাবময়তায় ঘিরে বিষাদের হাতছানি।
প্রতিনিয়ত ভারাক্রান্ত মনে আচ্ছন্ন থাকি।।
আপন যত্নের অহঙ্কারগুলো
কুঁকড়ে যাচ্ছে গহ্বরে।
প্রতিহিংসার প্রতিচ্ছবি ঘর বেঁধেছে সবার আঙ্গিনায়।
ভালোবাসার আস্ফালনগুলো
বড় ঝাপসা লাগে অন্তরে।
সূর্যোদয়ের মতোই
প্রখর ছিল জীবন।
জানো? এখন আর কেনো জানি একথা ভাবতেই পারিনা।
দুরাশার দুঃখের পাহাড়গুলো
যেনো অক্টোপাসে জড়িয়ে।
হিংসের কবচ রোপণ করা এখন মানুষের বুকের পাঁজরে।
হৃদয়ের আকর্ষণ যেনো নেই কারো অন্তরে।
তবুও বিশ্বাসই সম্বল।
বড় ভয় হয়, অবচেতন মনে
বার বার বলি——-
সুখে যদি কারো ঈর্ষা আসে?
কেউ যেনো কটাক্ষ দৃষ্টিতে চেয়ে আছে আমার পানে।
ভালোবাসার ছলনার রং তুলিতে বেদনার সৃষ্টি ক্ষণে ক্ষণে।
কী অদ্ভুত ধাতুতে সৃষ্টি মানুষ, তাইতো মাটির বুকেই অনাসৃষ্টি।।