ইভিএমে ভোট হলে কারচুপি ও সহিংসতা কমে যাবে : সিইসি
আদর্শবার্তা ডেস্ক :
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) বলেছেন, আমরা ইভিএম নিয়ে স্টাডি করেছি, ওখানে আমার ভোট আপনি, আপনার ভোট আমি দিতে পারব না। এতে জোরাজুরি, সহিংসতা অনেকখানি কমে যাবে। সিইসি বলেন, সংলাপে ইভিএমের পক্ষে যারা বলেছেন তারা একেবারেই কম নয়। আমরা তাদের ভোটাভুটির জন্য ডাকিনি। মতামতের জন্য ডেকেছিলাম। আমরা সুবিধাগুলো তুলে ধরেছি। ইভিএমে ভোট হলে কারচুপি ও সহিংসতা নিঃসন্দেহে কমে যাবে।
বুধবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা যদি ইভিএম তুলে দিই, আর যদি কারচুপি হয়, আমি নিশ্চিতভাবেই বলতে পারি কেউ পরাজিত হওয়ার পর মামলা করে ভোট পুনর্গণনা করেও জয়ী হয়ে সংসদে আসতে পারবেন না। এটা গ্রাউন্ড রিয়েলিটি। আমরা এটাকে আমলে নিয়েছি।’
কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘ইভিএম নিয়ে যারা অভিযোগ করছেন তারাই আমাদের দেখিয়ে দেবেন লিখিত এবং মৌখিকভাবে যে কীভাবে জালিয়াতি সম্ভব। আজ অব্দি কোনো দল এই কথাটা বলেননি বা দেখাতে পারেননি। সংলাপে পাঁচ/সাতটি দল সরাসরি ইভিএমের পক্ষে বলেছে, কতগুলো দল শর্ত সাপেক্ষে ইভিএমের পক্ষে বলেছে।’
সিইসি বলেন, ‘জাফর ইকবাল বলেছিলেন, ইভিএম কোনো জটিল মেশিন নয়। তিনি ওই হিসেবে বলছেন যে, এটা দুর্বল যন্ত্র। যন্ত্র দুর্বল কি সবল এটা আমার বিবেচনা করার বিষয় নয়। সবল হওয়ারও দরকার নেই, দুর্বল হওয়ারও দরকার নেই। যন্ত্র কাজ করছে কি না, এটাই আসল বিষয়। গত কয়েকবছর ধরে আমরা হাজার হাজার নির্বাচনে হাজার হাজার ইভিএম ব্যবহার করেছি। কোথাও আমাদের যন্ত্র ম্যালফাংশন করেছে, এমনটি ঘটেনি।’
তিনি বলেন, ‘ডিজিটাল জালিয়াতি সম্ভব, এই কথা তো প্রথমদিন থেকেই বলা হচ্ছে। আমরা এটা নিরসন করার জন্য প্রচুর সময় নিয়েছি। সব দলকে প্রযুক্তিবিদ নিয়ে এসে যাচাই করে দেখতে বলেছি। আমরাও ওদের কথা আমলে নিয়ে পরীক্ষা করেছি। বাজারে যে কথা চালু রয়েছে, ডিজিটাল জালিয়াতির স্বপক্ষে আমরা কোনো প্রমাণ পাইনি। দলগুলো যদি নির্দিষ্ট করে না বলতে পারে কীভাবে জালিয়াতি সম্ভব, তাহলে তো হলো না। আমরা দৃঢ়ভাবে বলতে চাচ্ছি ডিজিটাল জালিয়াতি সম্ভব নয়।’
এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘রাজনৈতিক সংকট আরও প্রকট হবে এটা আমি বিশ্বাস করি না। ইভিএম নিয়ে রাজনৈতিক সংকট প্রকট হবে না। অনেকে ইভিএম নিয়ে ভারতের তুলনা দিচ্ছে, পেপার ট্রেইল যুক্ত করা নিয়ে। এটা যদি থাকে তাহলে কে কাকে ভোট দিল পরে দেখা যায়। ভারতের যত নির্বাচন হয়েছে, ওই পেপার ট্রেইল দিয়ে কেউ এমপি পদে নির্বাচিত হয়েছেন, এমন নজির নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘আর্থিক সংকটের কথা আমি এপ্রিসিয়েট করি। এটা মনে করলে মন্ত্রণালয় দেখবে। এটা দেখার দায়িত্ব আমার না। একটা সুন্দর, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আমার এটা লাগবে, সরকার বলল, পয়সা দিতে পারব না। আমরা তো দেশের মানুষকে আর্থিক সংকটে ফেলে জোরাজুরি করব না। সুষ্ঠু নির্বাচনের যে আর্থিক মূল্য এবং অসুষ্ঠু নির্বাচনের যে আর্থিক মূল্য তা ইভিএমের মূল্যের চেয়ে অনেক বেশি। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি ১৫০টি আসনে ইভিএমে ভোট করার আর ১৫০টি আসনে ব্যালটে ভোট করার।’