মাক্রোঁ অনড়, ফ্রান্স জুড়ে বিক্ষোভ, ধর্মঘট, আগুন
আদর্শবার্তা ডেস্ক :
পেনশনের বয়স বাড়ানোর সিদ্ধান্তে অনড় মাক্রোঁ। প্রতিবাদে ফ্রান্স জুড়ে বিক্ষোভ, ধর্মঘট, রাস্তা অবরোধ।
বৃহস্পতিবার ফ্রান্স জুড়ে ধর্মঘট পালন করেছে শ্রমিক ইউনিয়নগুলি। অধিকাংশ বড় বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণ ছিল। কিন্তু প্যারিস-সহ বেশ কিছু শহরে প্রতিবাদ সহিংস হয়ে ওঠে।
প্যারিসে পুলিশকে লক্ষ্য করে প্রতিবাদকারীরা পাথর ছোড়ে। পুলিশও লাঠি চালায় এবং কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায়।
বোর্ডোতে বিক্ষোভকারীরা সিটি হলের প্রবেশপথে আগুন ধরিয়ে দেয়। তাতে ঐতিহাসিক হেরিটেজ ভবনের কিছুটা ক্ষতি হয়েছে।
বেশ কিছু শহরে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটিয়েছে, জল কামান ব্যবহার করেছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, ১৪৯ জন পুলিশ কর্মী আহত হয়েছেন। ১৭৯ জন বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের মধ্যেও অনেকে আহত হয়েছেন। এক নারীর আঙুল কাটা গেছে।
ফ্রান্সে অবসরের বয়স বাড়ানোয় বিক্ষোভ
চাকুরিতে অবসরের বয়সসীমা বাড়ানোর ঘোষণায় বৃহস্পতিবার ফ্রান্স জুড়ে বিক্ষোভ করেছে জনতা। প্যারিসের রাস্তায় জড়ো হয়ে এর প্রতিবাদ করেছেন লাখ লাখ মানুষ।
প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁর সরকার চাকুরি থেকে অবসরের বয়সসীমা ৬২ থেকে ৬৪ করার ঘোষণা দিয়েছে। একইসঙ্গে পেনশন সিস্টেমকেও সংস্কারের কথা বলেছে। এর প্রতিবাদে ফেটে পড়েছে ফ্রান্স।
প্যারিসের রাস্তায় বৃহস্পতিবার জড়ো হয়েছেন ১১ লাখ মানুষ। ট্রেড ইউনিয়ন সিজিটির লাল পতাকা নিয়ে তারা শ্লোগান দিয়েছেন সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে।
মাক্রোঁর সরকার বলছে, পেনশন সিস্টেমকে অর্থনৈতিকভাবে সুস্থির ও টেকসই করতেই তাদের এই পদক্ষেপ। অন্যদিকে ইউনিয়নগুলো বলছে, এতে তাদের কষ্টার্জিত শ্রম অধিকারগুলো ঝুঁকিতে পড়বে।
নানা পেশার মানুষেরা এই প্রতিবাদে জড়ো হন। যোগ দেন ফ্রান্সের দমকল কর্মীরাও। এভাবেই প্রতিবাদ করছিলেন কয়েকজন দমকল কর্মী।
উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরা একটি স্কুলের গেট বন্ধ করে দেয়। তাদের প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, “নো প্ল্যানেট, নো পেনশন”, কিংবা ‘‘অ্যাংরি হাই স্কুল স্টুডেন্টস”।
প্রতিবাদকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘাত হয়। এতে অনেকে আহত হন। গ্রেপ্তার করা হয় অনেককে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, অতি-বামপন্থিরা এই সহিংসতার পিছনে ছিল। তারা সরকারকে ফেলতে চাইছে। পুলিশকে মারতে চাইছে। নৈরাজ্যবাদীরা এই বিক্ষোভকে নিয়ন্ত্রণ করছে।
এই নিয়ে নয় দফায় বিক্ষোভ দেখিয়েছে বিক্ষোভকারীরা। জানুয়ারি মাস থেকে তারা সপ্তাহান্তে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন।
ইউনিয়নের নেতা মার্টিনেজ জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট মাক্রো
ধর্মঘটের ফলে বিভিন্ন জায়গায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বিঘ্নিত হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পাঁচজনের মধ্যে একজন শিক্ষক কাজে যোগ দেননি। বিক্ষোভকারীরা রেল স্টেশন ও বিমানবন্দরে যাওয়ার রাস্তা বন্ধ করে দেয়।
মাক্রোঁ পার্লামেন্টে বলেছেন, পেনশন সংস্কার জরুরি এবং দেশের স্বার্থে তা করা হচ্ছে।
ইউরোপের অনেক দেশেই অবসরের বয়স ৬৫। ওই দেশগুলি আবার অবসরের বয়স আরো বাড়াতে চাইছে।
ফ্রান্স এখন অবসরের বয়স ৬২ থেকে ৬৪ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তার বিরুদ্ধেই প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছে কর্মীরা।
সূত্র: জিএইচ/এসজি (এপি, এএফপি, রয়টার্স)