সাংবাদিক কবি নাজমুল ইসলাম মকবুল অসুস্থ: দোয়া কামনা
বিশেষ প্রতিনিধি:
সিলেট লেখক ফোরাম এবং মুক্তিযোদ্ধার প্রজন্ম সভাপতি সাংবাদিক কবি নাজমুল ইসলাম মকবুল এর জন্ম ১ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৭। এ পর্যন্ত প্রকাশিত হয়েছে কবির তিন তিনটি একক গ্রন্থ। লেখকের নিজের লেখা ও সুর করা একক সঙ্গীতের অ্যালবামও বের হয়েছে এ পর্যন্ত বারোটি।
অবশ্য দক্ষ হাতে সম্পাদনা করেছেন অনেকগুলি স্মারক ম্যাগাজিন ও পত্রপত্রিকা। সঙ্গীত লিখেছেন হাজারেরও অধিক। এসবের প্রকাশনা উৎসব হয়েছে বাংলাদেশ ছাড়াও লন্ডন, সৌদি, আরব আমিরাতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। প্রকাশের অপেক্ষায় রয়েছে আরও বেশ কয়েকটি কবিতা, ছড়া, প্রবন্ধ ও পূঁথিগ্রন্থ এবং অ্যালবাম।
নাজমুল এর বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবনের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে তাকে নিয়ে গুণীজনদের মুল্যায়নের চুম্বক অংশ এখানে তুলে ধরছি।
বিশ্বনাথ সরকারি ডিগ্রি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মোঃ সিরাজুল হক লিখেছেন, সিলেট লেখক ফোরাম এর যে বিশাল অর্জন, তার পরিসংখ্যানের দিকে তাকালে মনটা আনন্দে ভরে যায়। বাংলাদেশের আর কোন সাহিত্য সংগঠনের এমন বিশাল অর্জন আছে বলে আমাদের জানা নেই। আর এ অর্জনের মুল কারিগরই হচ্ছেন ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সাংবাদিক কবি নাজমুল ইসলাম মকবুল। তিনি ৭১ এর বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের সংগঠন মুক্তিযোদ্ধার প্রজন্ম সভাপতির দায়িত্বও পালন করে যাচ্ছেন দক্ষতার সাথে। পাশাপাশি লেখালেখি চালিয়ে যাচ্ছেন কয়েক দশক ধরে। কবিতার পাশাপাশি তাঁর শেকড়সন্ধানী প্রবন্ধগুলো প্রশংসিত হয়েছে বিজ্ঞজনদের কাছে। সমসাময়িক বিষয়ের উপর তাঁর লেখা অনেক অনেক কলাম ছাঁপা হয়েছে জাতীয় স্থানীয় এবং দেশ বিদেশের প্রথমসারির পত্র পত্রিকায়। মজার মজার ছড়া লেখার পাশাপাশি সঙ্গীত লিখেছেন হাজারেরও অধিক। এ পর্যন্ত তাঁর লেখা সঙ্গীতের অ্যালবামই বেরিয়েছে এক ডজন। যার অনেকগুলির প্রকাশনা উৎসবের বর্ণিল আয়োজনে উপস্থিত থাকার সৌভাগ্য হয়েছে আমাদের। অনেকটা ভুলে যাওয়া আমাদের পূঁথি সাহিত্যের জগতেও বিচরণ করেছেন লেখক। লেখছেন সমসাময়িক ও বিভিন্ন বিষয়ের উপর মজাদার পূঁথি। তাঁর সিলেটি ভাষায় লেখা গান পূঁথি ও কলাম আমাদের সিলেটিদের মনের খুরাক জুগায়। সিলেটি ভাষায় লিখে সিলেটি হিসেবে সিলেটিদের কাছে গৌরবের আসনে আসীন হয়েছেন কবি নাজমুল। লেখালেখির পাশাপাশি বিভিন্ন সময়ে লন্ডনের জনপ্রিয় কয়েকটি স্যাটেলাইট টেলিভিশনের প্রতিনিধির দায়িত্ব পালন করেছেন ও করে যাচ্ছেন দক্ষতা ও সুনামের সাথে।
টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিল লন্ডন, ইউ.কের সাবেক স্পিকার কাউন্সিলর মোঃ আয়াছ মিয়া লিখেছেন, সুদুর বিলেত থেকে যার আকাশছোঁয়া স্বপ্ন ও বর্ণিল এবং ব্যতিক্রম সব কার্যক্রম দেখে মনে আনন্দ পাই, উৎফুল্ল হই, উদ্বেলিত হই তিনি হচ্ছেন আমাদের সিলেটের অহংকার কবি নাজমুল। লন্ডনে আমরা তাঁর প্রথম সঙ্গীতের অ্যালবাম ‘আমরা ঘরর তাইন’ এর মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলাম ২০১৪ তে। অনুষ্ঠানে যোগদান করেছিলেন লন্ডনে অবস্থানরতো জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত খ্যাতিমান লেখক কবি সাংবাদিক সাহিত্যিক জনপ্রতিনিধি সমাজসেবী কমিউনিটি লিডার ও গুণীজনরা। অনুষ্ঠানে কবি নাজমুলের লেখা সঙ্গীতগুলো আমরা শুনেছিলাম প্রাণভরে।
আলোচনাসভায় বক্তারা তাদের বক্তব্যে বলেছিলেন কবি নাজমুল সাহিত্য জগতে অনেকদুর এগিয়ে যাবেন। সত্যিই এগিয়ে গেছেন অনেকদুর। পাড়ি দিয়েছেন অনেক পথ। রচনা করেছেন হাজারেরও অধিক সঙ্গীত। প্রকাশিত হয়েছে তিন তিনটি গ্রন্থ ও বারোটি সঙ্গীতের অ্যালবাম। সম্পাদনা করেছেন অনেকগুলি স্মারক ম্যাগাজিন পত্র পত্রিকা ও সাহিত্য সংকলণ। যা বাংলা সাহিত্য সম্ভারে এক অমুল্য সংযোজন। দেখা থেকে লেখা লেখকের তৃতীয় একক গ্রন্থ। প্রকাশের অপেক্ষায় রয়েছে লেখকের আরও বেশ কয়েকটি গ্রন্থ।
কবি নাজমুল শুধু লেখালেখিতেই নয়। সমাজসেবায়ও রেখেছেন অসামান্য অবদান। অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রয়েছে তাঁর নিপূণ হাতের ছোঁয়া। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠ ভরাট, শ্রেণীকক্ষ ও গেইট নির্মাণ, মাইক, ইউনিফর্ম ও টিপিন বক্স প্রদান, কমপিউটার ও সেলাই মেশিন প্রদান থেকে শুরু করে প্রদান করেছেন শিক্ষা সামগ্রীও।
বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও অসহায়দের ফ্রি চিকিৎসার ব্যবস্থা ও ঔষধপত্রের ব্যবস্থা করেছেন। পাশাপাশি সাংবাদিকতার জগতে তিনি একজন সৎ দক্ষ ও যোগ্যতাসম্পন্ন সাংবাদিক হিসেবে অর্জন করেছেন ঈর্ষণীয় খ্যাতি।
যুক্তরাজ্য থেকে লেখক ও গীতিকবি হাসনাত মুহ. আনোয়ার লিখেছেন ‘সৃষ্টি সুখের উল্লাসে’ মেতে থাকা এক অরুণ খুনের তরুণ কবি, সংগঠক, লেখক নাজমুল ইসলাম মকবুল। নিজ এলাকার সাহিত্য সাংস্কৃতিক অঙ্গনের মরা গাঙে জোয়ার আনার প্রত্যয়ে অবিরাম তাঁর ছুটে চলা। এ কাজে তিনি সফল হবেন, এতে আমি দৃঢ় আশাবাদি। অনাগত দিনগুলো তাঁর সৃষ্টির সোনার ফসলে ভরে ওঠুক। সুন্দর হোক, অনাবিল হোক তাঁর আগামির পথচলা।
বিশ্বনাথ প্রবাসী এডুকেশন ট্রাষ্ট, ইউ.কের সিনিয়র সহ সভাপতি আলহাজ্ব শেখ মোঃ তাহির উল্লাহ লিখেছেন, কবি নাজমুল একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। লেখালেখির পাশাপাশি সাহিত্য সংস্কৃতি, সামাজিক ও সেবামুলক বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। প্রবল ইচ্ছাশক্তি ও দৃঢ় মনোবল থাকলে জনপ্রতিনিধি না হয়েও স্বীয় যোগ্যতাবলে সমাজের সেবা করা যায়, সমাজের সর্বক্ষেত্রে রাখা যায় অবদান, যার জ্বলন্ত প্রমাণ কবি নাজমুল। অসহায়দের চিকিৎসা সহায়তা, বিবাহ সহায়তা, গৃহ নির্মাণ, হুইল চেয়ার বিতরণ, কমপিউটার ও সেলাই মেশিন বিতরণ, টিউভওয়েল স্থাপন, ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প ও ফ্রি ঔষধপত্র বিতরণ, বৃক্ষরোপন, ফুডপ্যাক বিতরণ, বন্যা ও করোনায় ক্ষতিগ্রস্থদের সহায়তাসহ আরও অনেক ভালো কাজ করেছেন। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে যে কাজ করেছেন তা আরও প্রশংসনীয়। কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্থাপন করেছেন কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠ ভরাট, মাইক প্রদান, ইউনিফর্ম প্রদান, শিক্ষার্থিদের মধ্যে টিপিন বক্স ও শিক্ষা সামগ্রী প্রদান, মেধাবীদের সম্মাননা, বীর মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা, রত্মগর্ভা মা-বাবা সম্মাননা, শিক্ষাবিদদের সম্মাননাসহ করেছেন আরও অনেক অনেক কাজ। সিলেট বিভাগের বিভিন্ন জায়গায় এসবের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আমরা যোগদান করে প্রত্যক্ষ করেছি ব্যতিক্রম এসব কার্যক্রম।
অলংকারী ইউনিয়ন ওয়েলফেয়ার এন্ড ডেভোলপমেন্ট ট্রাষ্ট, ইউ.কের সাবেক সাধারন সম্পাদক গয়াছ মিয়া গিয়াস লিখেছেন, নাজমুল ইসলাম মকবুল শুধু একজন কবি নয় একজন শেকড়সন্ধানী লেখক গীতিকার ছড়াকার পূঁথিকার ও কলামিষ্ট। সিলেটি ভাষায়ও লিখেছেন অবিরাম। তাঁর লেখায় আছে রস এবং কষ। একসময় আমাদের ঘরে ঘরে রাত বিরাতে আয়োজন হতো মশাল, কুপি বাতি কিংবা লন্টন জ্বালিয়ে রসে ভরা মনোমুগ্ধকর পূঁথি পাঠের আসরের। কালের পরিক্রমায় তা হারিয়ে যেতে বসেছে। আমাদের অতীত ঐতিহ্যকে ধারন ও লালন করতে কবি নাজমুল পূঁথি লিখছেন এবং তাঁর লেখা পূঁথি লন্ডনের জনপ্রিয় চ্যানেল এস এ তাঁরই কন্ঠে প্রচারিত হয়েছে কয়েক বছর পূর্বে। সাংবাদিকতায়ও তিনি অর্জন করেছেন ঈর্ষনীয় খ্যাতি। প্রিন্ট ইলেক্ট্রনিক ও অনলাইনসহ সকল ধারার মিডিয়ায় কাজ করেছেন সমানতালে দক্ষতার সাথে।
অলংকারীর এ কৃতিসন্তান লেখালেখির পাশাপাশি সমাজসেবায়ও রেখেছেন অসামান্য অবদান। এলাকার উন্নয়নে তাঁর এসব কার্যক্রম স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে ইতিহাসের পাতায়।
লেখকের বহুবিধ কর্মযজ্ঞের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে বিভিন্ন সময়ে শহীদ, যুদ্ধাহত ও খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ জাতীর শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা প্রদান, তাদের নিয়ে বিভিন্ন জাতীয় দিবসে মুক্তিযোদ্ধের গল্প শুনার আয়োজন, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আমন্ত্রণ জানিয়ে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সামনে তাদের পরিচয় করিয়ে দেয়া ও তাদের মুখে মুক্তিযোদ্ধের ইতিহাস শুনা এবং বীর সন্তানদের সুখে দুঃখে তাদের কাছে থেকে তাদের যে কোন ন্যায্য দাবী দাওয়া আদায়ে আন্দোলন সংগ্রামে অগ্রণী ভুমিকা পালন।
বিশ্বনাথে নির্মাণাধীন ওয়ান পাউন্ড হসপিটাল এর বিশ্বনাথ উপজেলা চিফ কো-অর্ডিনেটর, বিভিন্ন স্কুল কলেজ ও মাদরাসা পরিচালনা কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট ও কার্যকরী সদস্য হিসেবে পালন করছেন দায়িত্ব।
বর্তমানে তিনি অসুস্থ অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছেন। দোয়া করি কবি নাজমুল ইসলাম মকবুল আগের মত সুস্থ হয়ে সবার হৃদয়ে বেঁচে থাকুন হাজারো বছর আপন কর্মের মাধ্যমে।