ভারতে পালানোর সময় বিচারপতি মানিক আটক
আদর্শবার্তা ডেস্ক :
সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে আটক করেছে বিজিবি। সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার ডনা সীমান্ত এলাকা দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টাকালে রাত ১০টার দিকে ডনা বিজিবি ক্যাম্পে তাকে আটক করা হয়। বিজিবি সদর দপ্তরের পক্ষ থেকে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
স্থানীয় দালাল ধরে তিনি ভারতে পালাতে চেয়েছিলেন। আটকের সময় স্থানীয়দের তিনি জানান, তার সঙ্গে বাংলাদেশি এবং বৃটিশ পাসপোর্ট আছে। নগদ টাকা আছে ৪০ হাজার। আগের দিন তার সঙ্গে থাকা ৬০ থেকে ৭০ লাখ টাকা দুই যুবক মারধর করে নিয়ে গেছে। শুধু সীমান্ত পারের জন্য নৌকার মাঝিকে ১৫ হাজার টাকা দেন। একটি ভিডিওতে দেখা যায় বিচারপতি মানিককে প্রশ্ন করছেন কয়েকজন। এসময় তিনি তার নাম বলছেন। নিজের অসুস্থতার কথা বলছেন। দালালদের হাতে মারধরের শিকার হওয়ার কথা বলেন।
তার কাছ থেকে টাকা নিয়ে যাওয়ার তথ্য জানান।
কেন পালাচ্ছেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন ভয়ে পালাচ্ছি। কার ভয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন প্রশাসনের।
অন্য একটি ভিডিওতে দেখা যায় জঙ্গলে কলাপাতা বিছিয়ে তিনি শুয়ে আছেন। কেউ একজনের সঙ্গে কথা বলছেন। তাকে টাকা দেয়ার কথা বলছেন। ওই ব্যক্তি বলছেন আমাদের টাকা লাগবে না।
সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারপতি মানিক বিদায়ী আওয়ামী লীগ সরকারের ঘোর সমর্থক ছিলেন। সরকারের কার্যক্রম সমর্থন করে টকশোতে আলোচনা করতেন। সরকার পতনের পর তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলাও হয়েছে।
কানাইঘাট উপজেলার ডনা বিজিবি ক্যাম্পের নায়েক সুবেদার মহিবউল্লা রাত ১২টার দিকে জানান, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক তখন পর্যন্ত তাঁদের ক্যাম্পেই আছেন।
জকিগঞ্জ ব্যাটালিয়নের (১৯ বিজিবি) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল খোন্দকার মো. আসাদুন্নবী সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টাকালে বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে আটক করা হয়েছে। যথাযথ আইনানুগ প্রক্রিয়া শেষে তাকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হবে।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইস্যুতে সম্প্রতি একটি টেলিভিশন চ্যানেলে আয়োজিত টকশোতে আলোচক হিসেবে হিসেবে অংশ নেন সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক। কিন্তু আলোচনার একপর্যায়ে মেজাজ হারিয়ে সঞ্চালক দীপ্তি চৌধুরীর ওপর ক্ষিপ্ত হন তিনি। পুরো অনুষ্ঠানে বেশ কয়েকবার উপস্থাপিকার ওপর নিজের ক্ষোভ ঝাড়েন এবং উচ্চবাচ্য করেন। শুধু তা-ই নয়, তিনি অনুষ্ঠান শেষে স্টুডিও ছাড়ার আগে উপস্থাপিকাকে ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলে আখ্যা দেন। ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়।
এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক আপিল বিভাগের বিচারপতি ছিলেন। ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে তিনি অবসরে যান। এরপর বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও টেলিভিশন টক শোতে কথা বলতেন তিনি।