প্রচ্ছদ

রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় হারিছ চৌধুরীর দেহাবশেষ নিজ গ্রামে পুনরায় দাফন

  |  ২২:৩৪, ডিসেম্বর ৩০, ২০২৪
www.adarshabarta.com

আদর্শবার্তা ডেস্ক :
বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা হারিছ চৌধুরীর দেহাবশেষ পুনরায় দাফন করা হয়েছে।
রোববার (২৯ ডিসেম্বর ২০২৪) বাদ আসর সিলেটে গ্রামের বাড়ি কানাইঘাটের দর্পনগরে নিজ গ্রামে বাবার নামে প্রতিষ্ঠিত শফিকুল হক চৌধুরী মেমোরিয়াল এতিমখানার আঙিনায় রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হয়।
এর আগে সকালে ঢাকা থেকে সড়ক পথে হারিছ চৌধুরীর দেহাবশেষবাহী অ্যাম্বুলেন্স সিলেটে পৌঁছে। দেহাবশেষ রাখা হয় সিলেট সাকির্ট হাউসের সামনে। বেলা ২টার দিকে নিয়ে যাওয়া হয় নগরীর সিলেট শাহী ঈদগাহ ময়দানে। সেখানে দোয়া পরিচালনা করেন দরগাহ মসজিদের ইমাম ও খতিব হাফিজ মাওলানা আবু হুজায়ফা হোসাইন। শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন শাহী ঈদগাহ জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা আব্দুল মুমিন।
দোয়ার আগে মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিমের পরিচালনায় সেখানে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন মেক্সিকোতে নিযুক্ত রাষ্ঠ্রদূত মুশফিকুল ফজল আনসারী এবং হারিছ চৌধুরীর মেয়ে ব্যারিস্টার সামিরা তানজিন চৌধুরী।
সিলেট শাহী ঈদগাহ মাঠে দোয়া অনুষ্ঠানে বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে দলের কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকী, নগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান লোদী কয়েস, সাধারণ সম্পাদক এমদাদ হোসেন চৌধুরীসহ দলের নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
রোববার বাদ আসর হারিছ চৌধুরীর জন্মস্থান কানাইঘাট উপজেলার দিঘীরপাড় ইউনিয়নের সাতবাঁক শাহী ঈদগাহ মাঠে নিয়ে আসার পর বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনসহ এলাকার লোকজন উপস্থিত হন।
কানাইঘাট উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কফিনে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করে ‘গার্ড অব অনার’ শেষে বাবার নামে প্রতিষ্ঠিত শফিকুল হক চৌধুরী মেমোরিয়াল এতিমখানা প্রাঙ্গণে হারিছ চৌধুরীর কফিনে মোড়ানো লাশ দাফন করা হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারজানা নাসরিন, গোয়াইনঘাট উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাইদুল ইসলাম, কানাইঘাট সার্কেল এএসপি অলক কান্তি শর্মা, থানার ওসি আব্দুল আউয়াল, হারিছ চৌধুরীর স্ত্রী জোসনারা চৌধুরী, মেয়ে ব্যারিস্টার সামিরা তানজিম চৌধুরীসহ আত্মীয়-স্বজনরা।
দাফনের আগে সাতবাঁক শাহী ঈদগাহ মাঠে হারিছ চৌধুরীর বর্ণাঢ্য জীবনের স্মৃতিচারণ করে বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ফয়ছল আহমদ চৌধুরী, সিলেট জেলা বিএনপির সহসভাপতি মামুন রশিদ মামুন, উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মামুন রশিদ, কানাইঘাট উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি হাজি জসীম উদ্দিন, ওয়েছ আহমদ, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাস্টার সাজ উদ্দিন সাজু, জকিগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান, দিঘিরপার পুর্ব ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মুমিন চৌধুরী, কানাইঘাট উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমির ফয়সল আহমদ, ঝিংগাবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা মাস্টার আবু বকর, উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক খসরুজ্জামান পারভেজ, সড়কের বাজার আহমদিয়া মাদ্রাসার ভাইস প্রিন্সিপাল মাওলানা আব্দুল মান্নান, হারিছ চৌধুরীর চাচাতো ভাই, যুক্তরাজ্য প্রবাসী টিপু চৌধুরী প্রমুখ।
উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০২১ সালের ৩ সেপ্টেম্বর হারিছ চৌধুরী মারা যাওয়ার পর হারিছ চৌধুরী পরিচয় গোপন করে মরদেহ দাফন করা হয়। অধ্যাপক মাহমুদুর রহমান নামে হারিছ চৌধুরীকে ঢাকার সাভারের বিরুলিয়ায় জামিয়া খাতামুন্নাবিয়্যিন মাদরাসা প্রাঙ্গণে দাফন করা হয়। পরে তাঁর মেয়ে সামিরা চৌধুরী উচ্চ আদালতে রিট করেন। রিটের প্রেক্ষিতে মরদেহ উত্তোলন করে ডিএনএ পরীক্ষা করা হয়। ডিএনএ পরীক্ষায় হারিছ চৌধুরী নিশ্চিত হওয়ার পর সরকারের নির্দেশনায় রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফনের নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই নির্দেশনার আলোকে রোববার সিলেটের কানাইঘাটের গ্রামের বাড়িতে মরদেহ দাফন করা হয়।