ফ্রান্সে প্যারিসসহ কয়েক এরিয়া বাদে লকডাউন উঠে যাবে
দেলওয়ার হোসেন সেলিম, প্যারিস ফ্রান্স :
অবশেষে ১১ মে সোমবার থেকে ফ্রান্সের নাগরিকরা ফ্রিডম অব মুভমেন্ট ফিরে পাচ্ছেন। প্যারিস সহ কয়েকটি অঞ্চল ছাড়া লক ডাউন উঠে যাচ্ছে। বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইম্যানুয়েল ম্যাক্রোঁ গত ১৬ মার্চ লক ডাউন ঘোষণা করেন। প্রথমে ১৫ দিনের লক ডাউনের ঘোষণা করা হলেও পরে এর মেয়াদ ধাপে ধাপে ১১ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার (৭ মে ২০২০) ফ্রান্সের প্রধান মন্ত্রী এডোয়ার্ড ফিলিপ বলেছেন, প্যারিস সহ আরো কয়েকটি ঘনবসতি অঞ্চলে এখনো করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটতে থাকায় এখানে কিছু নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে। এ অঞ্চল সমুহে বাড়তি সতর্কতার প্রয়োজন রয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। ধীরে ধীরে এ অঞ্চল সমুহ থেকেও লকডাউন তুলে নেয়া হবে।
সরকারি সংশ্লিষ্ট দফতর থেকে জানানো হয়েছে, ফ্রান্সের অন্য অঞ্চল সমুহে সংক্রমণ হার কমে গেলে চলতি মে মাসের শেষের দিকে সিদ্ধান্ত নিয়ে জুনের শুরুতে সেকেন্ডারি স্কুল, ক্যাফে, রেস্টুরেন্ট, বার ইত্যাদি প্রতিষ্টান খুলে দেয়া হবে।
স্বরাস্ট্রমন্ত্রী কাস্টেনার বলেন, ১১ তারিখের পর ফরাসি নাগরিকরা ঘর থেকে বের হতে আর এটাস্ট্রেশন দরকার হবেনা । মিউজিয়াম, ও সাংস্কৃতিক নানান প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হচ্ছে । তবে কোনো কর্মসূচীতে পাঁচ হাজারের অধিক মানুষের সমাগমের উপর নিষেধাজ্ঞা সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত বলবৎ থাকবে । সবাইকে মাস্ক বাধ্যতামূলক পরতে হবে। নইলে ১৩৫ ইউরো জরিমানা। মাস্ক ব্যতিত কাউকে কোনো ট্রান্সপোর্টে চড়তে দেয়া হবেনা।
‘করোনার’ প্রকোপ সন্তোষজনক ভাবে না কমার কারণে Île-de-France, Mayotte, Hauts-de-France এবং Bourgogne-Franche Comté অঞ্চলকে বিশেষ সতর্কতার রেড জোনে রাখা হয়েছে । এই চার অঞ্চলের পার্ক, গার্ডেন ইত্যাদি জনসাধারণের ব্যবহারের ক্ষেত্রে আরো কিছুদিন নিয়ন্ত্রিত রাখা হবে।
ফ্রান্সের শিক্ষামন্ত্রী জানান, আগামী সপ্তাহে ১ মিলিয়ন শিক্ষার্থী এবং ১ লাখ ৩০ হাজার শিক্ষক আবার স্কুল শুরু করবে।
আজ সকালে প্যারিস মনপারনাস এবং ভার্রসাই ট্রেন স্টেশন ঘুরে দেখা গেছে, যাত্রীদের অন্তত ১ মিটার দূরত্ব বজায় রেখে চলাচলের জন্য কালার করে চিহ্নিত করা হয়েছে। জরুরি প্রয়োজনে কিছু মানুষ শৃংখলভাবে মাস্ক, গ্লাবস পরে দূরত্ব বজায় রেখে চলাচল করছেন।
ইতিমধ্যে দেজ ইউভলিন ডিপার্টমেন্ট (৭৮) এর মেরি (টাউন হল) থেকে নাগরিকদের বিনামুল্যে মাস্ক, টিস্যু এবং স্বাস্থ্যবিধি সহায়তা নির্দেশনা মুলক চিঠি বিতরণ করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ফ্রান্সে কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত ২৫ হাজার ৯৮৭ জন মারা গেছেন। এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৭৪ হাজার ৭৯১ জন। লকডাউনের জন্য ইতিমধ্যে ফ্রান্স সরকার নাগরিকদের মধ্যে বিভিন্ন বিশেষ বোনাস বৃদ্ধি করেছেন। এখানকার মানুষ আশা করছেন, সার্বজনিনভাবে সুস্থভাবে সুন্দর পৃথিবী আবার ফিরে পাবেন। অন্ধকার কেটে আলো আসবেই। ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকলে মিলেমিশে বেচে থাকার অব্যাহত প্রত্যাশা করছেন। সুসংবাদ আর শান্তির বার্তা পাওয়ার জন্য প্রার্থনা করছেন।