কৃষি অফিসের দৃষ্টি আকর্ষণ
কাজী শাহেদ বিন জাফর
আমাদের দেশটি কৃষি নির্ভরশীল হিসেবে এ খাতের উন্নয়নকল্পে সরকারের প্রচেষ্টা ও কোনো অংশে কম নয়। তাই এই খাতকে এগিয়ে নিতে, কৃষকের অনুপ্রেরণায় কৃষিজ উপকরণ অনুদান দিতে গিয়েও সরকারের অর্থের বিরাট অংশ এ খাতে ব্যয় হয় । আর তা যথা নিয়মে বিতরণ হয়না বলে অভিযোগ লক্ষণীয়।
হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার কৃষি অফিসে নানা অনিয়ম, উদাসীনতা এবং জনবল সংকটের কারণে এলাকার কৃষি খাত দারুণ ভাবে ব্যাহত হচ্ছে। ফলে কৃষকশ্রেণী আশাতীত ফসল উৎপাদন করতে পারছেনা। ক্ষয়ক্ষতির শিকার হচ্ছেন। অথচ সব ঠিক থাকলে কৃষিক্ষেত্রে এখানে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন হতো। স্বাবলম্বী হতে পারতেন বিপুল সংখ্যক কৃষক। দেশের কৃষি নির্ভর অর্থনীতিতে অনেক অগ্রগতি হতো। স্হানীয় কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পেতো।
সামগ্রিকভাবে কৃষিক্ষেত্রে নবিগঞ্জ উপজেলায় রয়েছে অপার সম্ভাবনা। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে সংশ্লিষ্ট দফতর যদি কৃষকদের পাশে এগিয়ে আসতেন। তাহলে বিরাজমান সমস্যা লাঘব হয়ে কৃষকগোষ্ঠীর মুখে হাসি ফুটতো।
প্রসংগত উল্লেখ্য, নবিগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি ইউনিয়নে কৃষকদের পরামর্শ ও অনুপ্রেরণা দেবার মতো কোনো ফিল্ড অফিসার নাই। একারণে চলতি বুরো মৌসুমে প্রায় পাঁচ শত একর বুরো জমি অনাবাদি রয়েছে। সার বীজ সহ খরচের ব্যয় বহন অযোগ্যতা দেখা গেছে বলে জানা গেছে ।
আমি কিন্তু সাংবাদিকতার অনুসন্ধিতসু মন নিয়ে বলছি না। সাধারণ একজন কৃষক হিসেবেই অনুনয় করছি। আমাদের এলাকায় অতি সত্বর একজন ফিল্ড অফিসার নিয়োগ দিন।
এলাকার কৃষি খাতকে আরোও শক্তিশালী করে তুলার জন্য।
আর তা কেন নয়। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে ২০১৮ সালে একজন ফিল্ড অফিসারের অনুপ্রেণায় আমি সরকারী মদদে চারাগাছ ও সার নিয়ে একটি মাল্টার বাগান করি। কিছু দিন পর সেই ফিল্ড অফিসার বদলি হয়ে অন্যত্র চলে গেলেন। কৃষি অফিস হতে এই বাগান পরিচর্যা ও পরামর্শ মূলক উপদেশ দেবার মতো কোনো লোক আজ পর্যন্ত উপজেলা কৃষি অফিসের দেখা মিলেনি। অথচ আমার এই প্রকল্প গড়িয়ে তুলতে ও প্রেরণায় জোগান দিতে সরকারের কিছু হলেও অর্থ খরচ করতে হয়েছে। কিন্তু তাদের উদাাাসীনতায় গাছগুলো যেভাবে বেড়ে উঠবর কথা ছিল সেভাবে হয়নি। সঠিক দিক নির্দেশনা পাওয়ার অভাবে। কোনো পরামর্শ সঠিকভাবে পাইনি। যেমন সার প্রয়োগ ব্যাপারে, কোন রোগের কোন ঔষধ ব্যবহার্য ইত্যাদি। নিজ উদ্যোগে অফিসে গিয়েও কাজ হয়নি। এই হলো কৃষি অফিসের দশা।
আজই শুনলাম এসব দায়ীত্ব নাকি চেয়ারম্যান সাহেবকে দিয়ে দিয়েছেন! “খাইয়া কাম নেই” চেয়ারম্যান তার কার্যক্রম ছেড়ে কৃষকের জমি দেখাশুনা করবেন। কৃষকের সার, বীজ বিতরণ করবেন। ভালো কথা, কৈ আজ পর্যন্ত কতজন কৃষক পেলো না, গায়েব হয়ে গেলো। সে খবরটা কী কেউ রাখছেন।প্রতি ইউনিয়নে সরকার জড়িত কয়টি সি, আইডি সংঘঠন রয়েছে তাও নজরে একবারও উদয় হলোনা। ওদের মাধ্যমেও কৃষকের তালিকা করিয়ে নিলেই তো প্রকৃত অনুদান যোগ্য কৃষকের তালিকা উঠিয়ে আসতো।
সাম্প্রতিক সময়ে শোনা যাচ্ছে, কৃষিজ উপকরণ সার, বীজ প্রভৃতি ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সাহেবের মাধ্যমে বিতরণের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
বাপ দাদার আমল হতে শুনে এবং দেখে আসছি হরহামেশা কৃষি ফিল্ড অফিসারের মাধ্যমে প্রকৃত অনুদান যোগ্য কৃষকের তালিকা প্রস্তুত করে উপজেলা কৃষি অফিসে জমা দিতেন।
সে অনুসারে কৃষকদের ডাক দিলে তালিকাভুক্ত কৃষকরা নিজ দায়িত্বে স্ব স্ব মালামাল তথা সার, বীজ, ঔষধ প্রভৃতি উপকরণ নিয়ে আসতো। আজ এই কৃষিজ উপকরণগুলি বিতরণের দায়িত্ব চেয়ারম্যান সাহেবকে দেয়া হয় কিসের ভিত্তিতে। এটাই স্থানীয় কৃষকদের জিজ্ঞাসা। বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সুনজরে আনার জন্য নিবেদন করছে সুশীল কৃষক সমাজ। এ ব্যাপারে আরো কিছু নিয়ে আবার আসছি আগামী দিনে।