চীনা-বংশোদ্ভূত সাংবাদিকের সঙ্গে তর্কাতর্কি, ব্রিফিং ছেড়ে চলে গেলেন ট্রাম্প
মোঃ নাসির, বিশেষ প্রতিনিধি, আদর্শবার্তা :
যুক্তরাষ্ট্রের করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে করা প্রশ্নকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের ঘটনা ঘটেছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও এক সাংবাদিকের মধ্যে। পরবর্তীতে আরো এক সাংবাদিকের সঙ্গে বাদানুবাদের ঘটনা ঘটার পর আকস্মিকভাবে ওই সংবাদ সম্মেলনস্থল ছেড়ে চলে যান তিনি।
‘দ্য টেলিগ্রাফ’ পত্রিকা জানায়, সোমবার করোনাভাইরাস নিয়ে হোয়াইট হাউসের প্রেস ব্রিফিংয়ে সিবিএস নিউজের চীনা-বংশোদ্ভূত সাংবাদিক উয়েজা জিয়াংয়ের পশ্নে ক্ষুব্ধ হন ট্রাম্প।
উয়েজা প্রশ্ন রাখেন, ট্রাম্প কেন বার বার জোরগলায় দাবি করছেন যে, বিশ্বের অন্য দেশের চেয়ে করোনাভাইরাস পরীক্ষায় যুক্তরাষ্ট্র অনেক ভাল করছে? যুক্তরাষ্ট্রে এখনো প্রতিদিন মানুষ মরছে, এমন সময়ে ভাইরাস পরীক্ষা নিয়ে কেন এ প্রতিযোগিতা?
এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সাংবাদিক জিয়াংকে বলেন, “সারা পৃথিবীতেই মানুষ মারা যাচ্ছে। এ প্রশ্ন চীনকে করা উচিত। চীনকে একথা জিজ্ঞাসা করুন, আমাকে নয়, বুঝেছেন?।”
জিয়াং তখন তার জাতিগত পরিচয়ের কারণে ট্রাম্প এভাবে কথা বলছেন কিনা সে ইঙ্গিত দিয়ে বলে ওঠেন, “স্যার বিশেষ করে আমাকে এমন কথা কেন বলছেন?”
জবাবে ট্রাম্প বলেন, “আমি কাউকে উদ্দেশ্য করে বলছি না, এমন বাজে প্রশ্ন যে-ই করতে চায়, আমি তাকেই বলছি।”
জিয়াং প্রতিবাদ করে বলেন, ‘এটা কোনো বাজে প্রশ্ন নয়।’
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে এসময় ট্রাম্পকে বেশ রেগে যেতে দেখা যায়। সিএনএনের সাংবাদিক কেইটলান কলিন্সকে ডাকার আগে ভ্রু কুচকে বলেন, ‘আর কেউ?’
কলিন্স মাইক্রোফোন ধরে বলেন, ‘আমার দুটো প্রশ্ন আছে।’
ট্রাম্প এবার বলেন, ‘না। অন্য কেউ।’
‘কিন্তু আপনি আমাকে বলেছেন,’ কলিন্স বলতে থাকেন, ‘আমার দুটো প্রশ্ন।’
‘আরেক জন প্লিজ,’ ট্রাম্প এভাবে বললেও কলিন্স জবাব দেন, ‘কিন্তু আপনি আমাকে ডেকেছেন।’
‘ডেকেছি। কিন্তু আপনি উত্তর দেননি। এখন আমি পেছনের ওই তরুণীকে ডাকব।’
তবে আর কাউকে না ডেকে সংবাদ সম্মেলনের ইতি টানেন তিনি। ‘লেডিস অ্যান্ড জেন্টলম্যান, থ্যাঙ্ক ইউ ভেরি মাচ’ বলে সম্মেলনস্থল থেকে বেরিয়ে যান ক্ষুব্ধ ট্রাম্প।
প্রসঙ্গত, করোনা ভাইরাস চীনে উৎপত্তি হলেও এতে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত ও মৃত্যু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মনে করেন চীনের গাফিলতির কারণে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়েছে করোনা ভাইরাস। যুক্তরাষ্ট্রে এ পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১৩ লাখ ৪৭ হাজার ৮৮ জন। করোনা ভাইরাসের উৎপত্তিস্থল চীনের চেয়ে যুক্তরাষ্ট্রে আক্রান্তের সংখ্যা ১৬ গুণ বেশি।