এবিএম সালেহ উদ্দীন-এর কবিতা
খুলে দাও রুদ্ধ দুয়ার
এবিএম সালেহ উদ্দীন
এক
বাতাসে কাঁপে লাশের গন্ধ
নি:সঙ্গতার অভিশাপে
শঙ্কিত ধরণী
হাওয়ায় হাওয়ায় অশ্রুতে
কাঁদে রক্তগোলাপ
নিকষ আঁধারে হাঁটু গেঢ়ে
বসে ঘোর অমানিশা
নক্ষত্রের বিদায়ী রাতে
ঝেঁকে বসে অন্ধকার
নির্মমতার সমরসজ্জায়
সর্বত্র ধ্বংসের মহড়া
অদৃশ্য শত্রুর কবলে স্থবির
হয়ে গ্যাছে পৃথিবী আমার
বাতাসে বাতাসে কান্নার
সুর
শ্মশানে ভাসে কবরের
ব্যাকুলতা
যন্ত্রণার হতশ্বাসে মাটি
কাঁপে থরথর
প্রতিদিন প্রতিরাত এ
কেমন নৈরাশ্যের বিকিরণ !
নেই কোন কর্ম তাগিদ
তবু কেন পরিশ্রান্তের রুদ্ধশানাই ?
নিস্তব্ধার বিব্রত হাহাকারে
ঘুম আসেনা
অলস রাতের কর্মহীন
উদাসে ঘুম আসেনা ।
আমি কেবল নিজেকে
বুঝাই-
প্রদীপ্তির বহ্নিশিখায় স্থির
করো হৃদয়খানি
উচ্চস্বরে বলে উঠি -‘ডোন্ট
বি পেনিক’
ঝেরে ফেলো অশান্ত
প্রমাদ
প্রত্যাশার স্বর্ণরেখায় খুলে
দাও হৃদয় দুয়ার…
দু’হাত তুলে তাকাও
নীলাকাশ
প্রত্যুষের সমারোহে নয়ন
জুড়ে দেখো আলোর
পৃথিবী ।
দুই
যদিও
পৃথিবী জুড়ে আদিগন্ত
অন্ধকার
নিখুঁত পরিকল্পনায়
ধ্বংসের মহড়া
অক্ষরবিলাপে শোকার্তের
আর্তনাদ
ঘোলা পানির নষ্টসুখে
চারিদিকে বিষাদ হাহাকার ।
তবুও বলছি-
সহসা একদিন কেটে যাবে
অন্ধকার
সূর্যের আলোক রশ্মিতে
ভোর ছুঁয়ে যাবে
হেমন্তের আকাশে বসবে
তারার মেলা
আবার সকাল হবে
শিশিরের শীতল ছোঁয়ায়
ঝলসে উঠবে দিবসের
আলো
সমুদ্রের নীল কল্লোলে
ফিরে আসবে নদীদের
প্রাণ
বাতাসে ভাসবে আনন্দ
ধ্বনি
ঝরঝর বৃষ্টি নামবে
ফসলের মাঠে ফুটবে
কিষাণের হাসি
অন্ধকার কেটে যাবে
আবার সকাল হবে
প্রতূষের সমারোহে নীল
আকাশের নীচে
আনন্দ ও খুশির ঝলকে
আবার হেসে উঠবে নতুন
পৃথিবী…