রুশ হস্তক্ষেপের আশঙ্কা ফের মার্কিন নির্বাচনে
মোঃ নাসির, নিউ জার্সি, আমেরিকা থেকে :
চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে রাশিয়া ফের হস্তক্ষেপ করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইউরোপের দেশগুলোও এ ধরনের হস্তক্ষেপ থেকে শঙ্কামুক্ত নয়। যুক্তরাষ্ট্রের গত নির্বাচনেও রাশিয়ার বিরুদ্ধে হস্তক্ষেপের অভিযোগ উঠেছিল। এ নিয়ে করা তদন্তেও যার প্রমাণ পাওয়া যায়। এবার করোনা ভাইরাস রাশিয়ার জন্য নতুন কি সুযোগ এনে দিয়েছে? কি বলছেন বিশ্লেষকরা?
করোনা এখন বহুল আলোচিত ইস্যু। ভুয়া তথ্য ছড়াছড়ি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য নতুন একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে বিদেশি শক্তিগুলোর এর সুযোগ নেওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে। এটি কার্যকরভাবে মোকাবিলা করতে গেলে আটলান্টিকের দুই পাড়ে গোয়েন্দা সহযোগিতা বাড়াতে হবে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই আন্তর্জাতিক সহযোগিতার বিষয়টি ঝুলিয়ে দেন। রাশিয়া সরাসরি মার্কিন নির্বাচনী প্রক্রিয়া ব্যাহত করবে না, যা করতে পারে তা হলো ভুয়া তথ্য ছড়িয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে ভুল বুঝাবুঝি তৈরি করতে।
এদিকে করোনা ভাইরাস বিস্তারের আশঙ্কায় ইউরোপে ফ্রান্স, ইতালি, স্পেন, ব্রিটেন ও নর্থ মেসেডোনিয়ায় অনুষ্ঠেয় নির্বাচন স্থগিত হয়েছে। এছাড়া নির্বাচন স্থগিত হয়েছে যেসব দেশে তার মধ্যে আছে বেলারুশ, আইসল্যান্ড, বসনিয়া, চেক রিপাবলিক ও ইউক্রেন।
১০ মে পোল্যান্ডে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও সেটি পিছিয়ে যায়। করোনা পরিস্থিতির সুযোগে যে দেশটি ভুল তথ্য ছড়িয়ে দিতে পারে বলে যে দেশের বিরুদ্ধে সন্দেহের তীর উঠছে সেটি রাশিয়া। কারণ দেশটি এর আগে এমন কাজ করেছে বলে প্রমাণ আছে। মনে করা হয় ক্রেমলিনের উদ্দেশ্য পশ্চিমা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করা, নির্দিষ্ট কোনো দেশের নির্বাচন বানচাল করা নয়। সংবেদনশীল রাজনৈতিক তথ্য হাতিয়ে নেওয়া এবং সুবিধাজনকভাবে জনসাধারণের মধ্যে প্রকাশ করা এমনি একটি লক্ষ্য। অন্য কৌশলের মধ্যে আছে নির্দিষ্ট কোনো প্রার্থীকে সমর্থন করা, নির্বাচনী পরিবেশ অস্থিতিশীল করা ও চরমপন্থি মতাদর্শীদের প্রশ্রয় দেওয়া।
২০১৯ সালের শেষের দিকে ইনস্টাগ্রামে এরকম কিছু তথ্য প্রকাশিত হয়। এর সঙ্গে রুশ অনলাইন অপারেশন গ্রুপ ইন্টারনেট রিসার্চ এজেন্সির (আইআরএ) সম্পর্ক আছে বলে মনে করা হয়। ক্রেমলিনের সমর্থনপুষ্ট আইআরএ ২০১৬ সালের নির্বাচনের ফেসবুকে ভুয়া তথ্য ছড়াতে মুখ্য ভূমিকা পালন করে।
ভুয়া তথ্য ছড়ানোর বিরুদ্ধে সক্রিয় ইউরোপীয় ইউনিয়নের এক্সটার্নাল অ্যাকশন সার্ভিস জানিয়েছে মহামারি ছড়িয়ে পড়ার পর ক্রেমলিন সংশ্লিষ্ট বহু সাইট থেকে ভুল তথ্য ছড়ানো হয়েছে এবং তা অব্যাহত গতিতে চলছে।