শাঁতো দ্যু ভার্সাই; যতো দেখি ততোই ভালো লাগে
:: দেলওয়ার হোসেন সেলিম ::
ফ্রান্সের শাঁতো দ্যু ভার্সাই বিশ্ব বিখ্যাত একটি দুর্গ। একটি প্রাচীন রাজকীয় প্রাসাদ। এই প্যালেস অব ভার্সাইতে ফ্রান্সের রুপকার রাজাগণ বসবাস করেছিলেন। তাদের মধ্যে কিং লুই চতুর্দশ, চার্লস এক্স, লুই ফিলিপ, নেপোলিয়ানের নাম উল্লেখযোগ্য।
১৬৮২ থেকে ১৭৮৯ সাল পর্যন্ত ফ্রান্সের রাজধানী ছিলো এই ভার্সাইয়ে। ফরাসী সম্রাট ত্রয়োদশ লুই সর্বপ্রথম ১৬২৩ খ্রিস্টাব্দে ইট ও পাথর দিয়ে ভার্সাইয়ে একটি হান্টিং লজ নির্মাণ করেন। সেটিই ছিলো শাঁতো দ্যু ভার্সাইর সুচনা। এরই ধারাবাহিকতায় ফরাসী নৃপতি লুই চতুর্দশ নিজের বাস ভবন হিসেবে বিশাল প্রাসাদ ও উদ্যান বানান। ১৬৭৭ খ্রিস্টাব্দে প্রাসাদের নির্মাণ কাজ পুর্ণতা পায়। এরপর ফরাসী বিপ্লবের পরবর্তি সময়ে শাঁতো দ্যু ভার্সাইকে আরো সুন্দর এবং পরিপূর্ণ করা হয়, নতুন ডিজাইনার দিয়ে। পরে ইউরোপের অন্যান্য শাসকগণ তাদের নিজস্ব “ভার্সাই” নির্মাণের চেষ্টা করেছেন। কিন্তু ফরাসী সম্রাটের বাস ভবনটি হয়ে যায় পৃথিবীখ্যাত রাজপ্রাসাদ।
বিশাল আয়তনের মনোরম পরিবেশে অবস্থিত ঐতিহাসিক এই রাজপ্রাসাদ দেখতে প্রতিদিন দেশী বিদেশী অসংখ্য পর্যটক ভীড় জমান। বছরে প্রায় ১ কোঠি পর্যটক এই রাজপ্রাসাদ পরিদর্শনে আসেন বলে জানা গেছে। প্যারিস গারদ্যু নর্দ থেকে মাত্র ২১ কিলোমিটার দুরত্বে শাঁতো দ্যু ভার্সাই অবস্থিত। ইউনাইটেড ন্যাশন্স এডুকেশন, সাইন্স এন্ড কালচারাল অর্গানাইজেশন (ইউনেস্কো) কর্তৃক স্বীকৃত ও প্রণীত বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্হান হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে প্যালেস এন্ড পার্ক অব ভার্সাই।
ভার্সাই শহরটি অপার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর। এখানে রয়েছে বড় প্রসস্ত – সোজাসুজি রাস্তা। সারি সারি গাছগাছালি আর ফুলফলের সমারোহ। গাছসমুহের ডাল – পাতা আধুনিক ডিজাইনে চুলের মতো সুন্দর করে কেটে রাখা হয়। এখানকার সবকিছুই সাজানো গোছানো। প্রাচীন হাট বাজার, পৌরসভা, অফিস, আদালত, পুলিশ স্টেশন, হাসপাতাল, ইউনিভার্সিটি সহ গোটা ভার্সাই নগরের সবই পর্যটকদের আকর্যণীয়। এখানে কয়েকটি ফরাসী সেবামূলক এসোসিয়েশন নিয়মিত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। ভার্সাই শহরটি ইলদ্যু ফঁস অঞ্চলের ইউভলিন ডিপার্টমেন্টের অন্তর্ভুক্ত একটি পর্যটন ও ঐতিহ্যবাহী এরিয়া। ফ্রান্সের অর্থনৈতিক স্বচ্ছল এবং সেবামুলক কার্যক্রমের জন্যে ভার্সাই শহরের সুনাম সুখ্যাতি রয়েছে। ভার্সাই রাজপ্রাসাদের চোখ ধাঁধাঁনো মনুমেন্ট স্মৃতিস্তম্বের ঐতিহাসিক রাজকীয় চরিত্রগুলোর উপস্থিতি চোখে না দেখলে বিশ্বাস করতে পারবেন না কতই সুন্দর!
বৃহত্তর প্যারিস অঞ্চলে অবস্হিত শাঁতো দ্যু ভার্সাই ; যতো দেখি ততোই ভালো লাগে। এর অপরুপ সৌন্দর্য বারবার কাছে টানে। প্রথমে বহুবার আগ্রহের সহিত একা একা ঘুরে দেখেছি। ইতিহাস জানার চেষ্টা করেছি। আবার অনেকের সাথেও ঘুরেছি। এরমধ্যে এখানে এক দিনের গ্রুপ ভিত্তিক পরিদর্শনের স্মৃতি রোমন্থন করছি।
২০১৭ সালের ২৮ এপ্রিলে সিক্যুর ক্যাথলিক রেসিউ মনডিয়াল কারিতাস, সেন্ট কোয়ান্টিন এন ইউভলিন (৭৮) ব্যুরো অফিসের আমন্ত্রণে আমি শাঁতো দ্যু ভার্সাই পরিদর্শন ও পিকনিকে অংশ গ্রহণ করি। সিক্যুর ক্যাথলিক কারিতাসের ডিরেক্টর ম্যাডাম মিশেল এন্ড পিয়েখ গ্রাল আমাকে আমন্ত্রণ করেছিলেন। ফ্রান্সে বসবাসরত বিভিন্ন দেশের, বিভিন্ন পেশার আমন্ত্রিত লোকজনদের নিয়ে ঐদিন শাঁতো দ্যু ভার্সাইয়ে আনন্দ ভ্রমন ও পিকনিক অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ গ্রহণকারীদের কয়েক ঘন্টার জন্য যেন অন্য এক ভুবনে নিয়ে গিয়েছিল, যেখানে হয়তো অনেকেই কখনো যাননি! এজন্য তাদেরকে ধন্যবাদ জানাই।
প্রসংগত উল্লেখ্য, বিশ্বব্যাপী নেটওয়ার্ক সিক্যুর ক্যাথলিক কারিতাস মানুষের সেবায় নিয়োজিত একটি বৃহৎ প্রতিস্টান । বিশেষ করে, ফ্রান্সে আশ্রয়প্রার্থী বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের, বিভিন্ন ধর্ম বর্ণের মানুষদের এড্রেস সহ বাসস্থান, খাদ্য, বস্ত্র, চিকিৎসা, শিক্ষার মতো মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে সাহায্য সহযোগিতা করে থাকে আন্তর্জাতিক এই সেবামূলক অর্গানাইজেশন। এর উদ্যোগে ফ্রান্সে রুটিন অনুযায়ী সাহিত্য, সাংস্কৃতিক, বিনোদনমুলক কার্যক্রম, ভ্রমণ, পিকনিক ইত্যাদি আয়োজন করা হয়ে থাকে। এসব কার্যক্রম বিনামূল্যে প্রদান করা হয়। সেদিন নির্ধারিত সময়ে সিক্যুর ক্যাথলিক কারিতাসের সেন্ট কোয়ান্টিন (৭৮) অফিসের কাছাকাছি বাস স্টেশন থেকে কর্মকর্তা ও সেচ্ছাসেবকরা বাসযোগে আমাদেরকে নিয়ে রওয়ানা হন। প্রায় ১৫ মিনিট পরে আমরা শাঁতো দ্যু ভার্সাই পৌঁছে শুরু হয় ফরাসী সুস্বাদু খাবারের ধুম। লাঞ্চ শেষে আনন্দ মনে ফটোসেশন, সেলফি তোলতে থাকেন অনেকেই।
শাঁতো দ্যু ভার্সাইয়ে রাজকীয় ফটকের ভিতরে মস্ত বড় এক প্রাঙ্গণকে তিন দিকে ঘিরে চওড়া কাঁধ বলশালী পুরুষের মতো সামনে দু’হাত বাড়িয়ে দাঁড়িয়ে আছে বিশাল ইমারত। ইমারতের ঠিক মাঝে ফঁতেনব্লোর পরিচয় চিহ্ন হয়ে যাওয়া সেই বিখ্যাত অশ্বক্ষুরাকৃতি সিড়ি। দু’ধারে যেন উইম্বলডনের চারটে সেন্টার কোর্ট। উপমাটা লাগসই। কারণ এইসব প্রাসাদেই ফরাসী রাজারা টেনিস খেলার উদ্ভব করেছিলেন। যাজকদের আশ্রম ভেঙ্গে নির্মিত পশ্চিমের এই ইমারতটির পিছনে আরও পুর্বে আছে শিকার গৃহ, মূল প্রাসাদ। মাঝে যোগসূত্র আড়াই শত ফুট লম্বা খিলান যুক্ত এক অলিন্দ। যার একতলার স্নাগারে ফ্রান্সিস নিভৃতে উপভোগ করতেন বিখ্যাত চিত্র শিল্পী লিও নার্দোর লা জোকন্ডা অর্থাৎ মোনালিসার সান্নিধ্য। দোতলায় তৈরি হয় রেসো, প্রিম্যাতিচ্ছের নতুন ধরনের ছবিতে সাজানো ফরাসী রেনেসাঁর আদি নিদর্শন বলে খ্যাত ফ্রান্সিস গ্যালারি। পুর্বমুখি মুল প্রাসাদের বাহিরের অংশে শুধুমাত্র কিছু করিন্তিয়ান ঢং- এর কলাম আর কলোনেড। এটি সোনার পাথে বাঁধানো আর্চ করা জানালা আর খাজকাটা ইটের পিল্যাস্টার। এই বহুভুজ সুবিশাল প্রাসাদকে ঘিরে দিঘী, ফোয়ারা, জলপথ, বাগান, গাছপালা, ফুল ফল, বিস্তৃত উদ্যান। আর প্রাসাদের সামনে উচুঁ একটি ঘোড়ার মুর্তির উপরে বানানো হয়েছে কিং লুই চতুর্দশের মুর্তি। দেখে মনে হয় বিশ্ব নন্দিত রাজপ্রাসাদটি দেখতে আসা অসংখ্য পর্যটকদের তিনি স্বাগতম ও শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন।
বহু মূল্যবান মার্বেল, সোনা, রুপার পাথে ঘেরা নানান দুষ্প্রাপ্য শিল্প সম্ভার, ঝকঝকে ছবি, নজরকাড়া মুর্তি আর রকমারি আলোকসজ্জা দিয়ে প্রাসাদের ঘরগুলো নান্দনিক সৌন্দর্যে ভরপুর। যাহা দেখে অনুভব করা যায় রাজা রানীদের নিত্য দিনের আরাম আয়েশের কাহিনি। ক্যাথলিক ধর্ম রাজাদের জীবন যাত্রার কতখানি জুড়ে ছিলো। তাহা বুঝা যায়, প্রাসাদের প্রধান চ্যাপেল ট্রিনিটির জমকালো অন্দর সজ্জায়। রাজা, রানীসহ তাদের সন্তানদের এবং আত্বীয় স্বজনদের পৃথক পৃথক সুরম্য অট্টালিকা। ভার্সাই প্রাসাদে মোট কক্ষের সংখ্যা ১ হাজার ৮ শতটি। কাসল স্হাপত্য সাদৃশ্য, প্রাচীন রাজকীয় এই বাসভবনের আয়তন প্রায় ৮ হাজার স্কয়ার হেক্টর। এর আশ পাশে ও আন্ডারগ্রাউন্ড জুড়ে রয়েছে ঐতিহ্যবাহী স্হাপনা। বিশাল আয়তনের নয়নাভিরাম গার্ডেন ও পার্ক, লেক, ঝরণা সমুহের পাশে ঘুরতে গিয়ে পথ হারিয়ে যেতে পারেন। তাই শাঁতোদ্যু ভার্সাইর ভ্রমণ ম্যাপ সাথে রাখলে ভালো হয়।
শাঁতো দ্যু ভার্সাইয়ে যাহা দেখার আছে, তাহা হলোঃ প্লেস দ্য আর্ম, কর্টয়ার্ড অব অনার, রয়্যাল কর্টয়ার্ড, মার্বেল কর্টয়ার্ড, নর্থ উইং, সাউথ উইং, মিনিস্টার্স নর্থ উইং, মিনিস্টার সাউথ উইং, এপোলো ফন্টিন, ইনসালাডস গ্রোভ, কিংস গার্ডেন, চেষ্টনট থ্রিজ রুম, কলনেড গ্রোভ, ডম্স গ্রোভ, মিরর ফন্টিন, গ্রীন কার্পেট, জিরান্ডাল গ্রোভ, ডফিন্স গ্রোভ, লেঠোনা ফন্টিন এন্ড পারটের, বেলরুম, এপোলো বাথ্স গ্রোভ, ওয়াটার পারটের, থ্রি ফন্টিন, নেপচুন ফন্টিন, ড্রাগন ফন্টিন, ওরান্জেরি, সাউথ পারটের, নর্থ পারটের, ট্রায়ামফল আর্কশ গ্রোভ, সেটার্ন ফন্টিন, বাকাস ফন্টিন, কুইন্স গ্রোভ, অবলিস্ক গ্রোভ, ফ্লোরা ফন্টিন, স্টার ফন্টিন, সেরিজ ফন্টিন, ওয়াটার ওর মারমুসেট্ ওয়াক, নেম্পস বাথ, পিরামিড, ডাউন ফন্টিন, নাইট ফন্টিন, ওয়াটার থিয়েটার গ্রোভ, চ্যাপেল, ফ্রেন্চ গার্ডেন, ফ্রেন্চ পাভিলিয়ন, কুইন্স থিয়েটার, রক, বিউদুয়া, কেটালপাস ক্লিয়ারিং, যিসূ গার্ডেন, লেন্ডস্কেপ গার্ডেন, টেম্পল অব লাভ, কুইন্স হাউজ, মার্লবুরুজ টাওয়ার, রেফরেশমেন্ট ডেইরি, মিল, বদুয়ার, ওয়ার্মিং রুম, ফার্ম, হর্সেস ফন্টিন, বটম ফন্টিন, ওয়াটার সাইড বোর্ড, অ্যমিপথিয়েটার, গ্রীন গ্রোভ, যিসূ প্যাভিলিয়ন, লাশাপেল, রয়্যাল অপেরা ইত্যাদি।
আমি মনে করি, ঐতিহাসিক ভার্সাই ভ্রমনে আসলে পুরো ১ দিন সময় নিয়ে আসা উচিত। ইন্টারনেটে টিকিট কনফার্ম করে আসলে সময় ও অর্থ সাশ্রয় হবে। চাইলে রাজপ্রাসাদের আউটডোরের বিভিন্ন অংশ ইলেকট্রিক কার এবং মিনি ট্রেনে চড়ে দেখতে পারেন। লেকের স্পিড বোট ভাড়া নিয়ে পানিতে দৌড়াতে পারবেন। বাইসাইকেল ভাড়া করেও ঘুরে দেখার সুযোগ রয়েছে। ইনডোরের সব কিছু ঘুরে দেখতে দেখতে যদি ক্লান্ত হয়ে পড়েন, তাহলে গ্যান্ড ক্যাফে, গার্ডেনের কোনায় কোনায়, ফোয়ারার পাশের রেস্টুরেন্টে, ফাস্ট ফুডের দোকানগুলিতে বসে হালকা নাস্তা করে নিতে পারেন। তবে এখানকার দোকানগুলোতে খাদ্য সামগ্রীর দাম একটু বেশি। নিজের পছন্দের খাবার সাথে নিয়ে প্রবেশ করলে পিকনিক স্পটে বসে খেতে পারবেন। আনলিমিট ফোর জি ফ্রী ওয়াই ফাই ব্যাবহার করার সুযোগ রাখা হয়েছে। আর প্রবেশের আগে ইনফরমেশন অফিস থেকে বিনামূল্যে ম্যাপ, ইস্টেট অব ভার্সাইর নির্দেশিকা সংগ্রহ করতে ভুলবেন না।
ভার্সাই শহরে আমাদের বাংলাদেশের বাঙ্গালী কবি মাইকেল মধুসুদন দত্ত বসবাস করেছিলেন। ভার্সাইর বিশ্ব নন্দিত রাজপ্রাসাদ ও নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য কবির জন্য ছিলো উপরি পাওয়া। তাই প্রায়ই অনাহারে, অর্ধাহারে কাটানো চরম দুর্দশার মধ্যেও ভার্সাইয়ে বসে মহা কবি মধুসুদন রচনা করতে পেরেছিলেন তাঁর বিখ্যাত চতুর্দশপদী কবিতা (সনেট)। কালজয়ী কবিতাটি প্রথমে ইন্ডিয়ার কোলকাতায় রচিত হলেও পরে ভার্সাইয়ে তিনি কবিতাটি নতুন করে লিখেছিলেন। প্রিয় কবির সেই কবিতাটি এখানে উল্লেখ করছি।
ভার্সাইয়ে যেভাবে আসতে পারবেনঃ প্যারিস অস্টারলিজ হতে ট্রেন লাইন আরইআর “সি” যোগে ভার্সাই শাঁতো রিভঘোশ স্টেশনে নামতে হবে। প্যারিস মনটপারনাস হতে ট্রেন লাইন “এন” যোগে ভার্সাই শন্তির স্টেশনে নামতে হবে। প্যারিস সেন্ট লেজার হতে লাইন “এল” যোগে ভার্সাই রিভদ্রোয়াত স্টেশনে নামতে হবে। এছাড়া ফ্রান্সের যেকোন এরিয়া থেকে অটো বাস, ট্যাক্সি যোগেও ভার্সাইয়ে আসতে পারবেন। প্যারিসের জিরো পয়েন্ট গার দ্যু নর্দ হতে ভার্সাইয়ে আসতে সময় লাগবে মাত্র ২০ থেকে ৪০ মিনিট। আমি বেশ কয়েক বার শাঁতো দ্যু ভার্সাই ঘুরে দেখেছি। যতই দেখি, ততই সুন্দর লাগে। ভার্সাই অঞ্চলের লোকজন খুবই ভদ্র এবং উদার মনের অধিকারী। ফ্রান্সে প্রথমে আসার পর আমার সহোদর (ছোট ভাই) সুয়েব আমাকে ভার্সাই ঘুরে দেখিয়েছিলো। পরবর্তীতে স্হায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ লাভের পর “অফিস ফঁসে দ্যু ল্যু ইইমিগ্রেশন এন্ড দ্যু লইন্টারগেশন” (অফিই) কর্তৃক বাধ্যতামূলক ফরাসী ভাষা কোর্স এবং পরবর্তীতে “ফ্রান্সের কর্মসংস্থান বিভাগ” কর্তৃক পেশাগত দুটি ডিপ্লোমা সম্পন্ন করেছি এই ভার্সাই শহরে। জব করেছি শাঁতো দ্যু ভার্সাইয়ে। বর্তমানে এই শহরেই আমার বসবাস। আমি ফরাসী নাগরিকত্ব লাভ করায় সিটি কর্পোরেশন (মেরি) থেকে একটি ছোট্ট আবাসন পেয়ে এই এরিয়াতে বসবাস করছি। খুবই অল্প সময়ে প্রিয় জন্মভুমি সিলেটের মতো অনেক চেনা, জানা হয়ে গেছে ভার্সাই শহর এবং প্রিয় ভার্সাইর অতিথিপরায়ণ মানুষজন। এখানে বসবাসরত স্থানীয় ফরাসী মানুষদের মায়া, মমতা, উজাড় করা ভালোবাসা, পরামর্শ পেয়েছি। সর্বোপরি তাঁরা আমাকে সহযোগিতা দিয়ে আগলে রেখেছেন। আমি হয়েছি, তাদের আপনজন। হয়েছি এখানকার একজন তালিকাভুক্ত ভোটার। জয়তু ভার্সাই।
লেখকঃ কানাইঘাট প্রেসক্লাবের প্রতিষ্টাতা সিনিয়র সহ সভাপতি, ফ্রান্স বাংলা প্রেসক্লাবের সহ সভাপতি।