প্রচ্ছদ

জীবনের কথা: আমি কেন ভালো হতে পারলাম না!

  |  ১৩:০৯, আগস্ট ০৭, ২০২০
www.adarshabarta.com

:: কাজী শাহেদ বিন জাফর ::

যদিও “ভালো হতে পয়সা লাগেনা” প্রবাদবাক্যের এই উক্তি টার সাথে আমি নিজেই কতটা সম্পিক্ত তা আজো সে মত ও পথের ধারা খুঁজে পাইনি। তাই এ প্রবাদটা সামনে রেখে সমাজে ভালো হবার কতোইনা চেষ্টা তদবির করেছি। কিন্তু ভালো মানুষ সাজার কোনো পথ আজোব্দি খুঁজে
পেলাম না। পেলামনা ভালো হতে, জীবন চলার পথে হাতেকলমে দেখিয়ে শিখিয়ে দেবার মতো কোনো মানুষ। তথাপি একটু ভালো হবার চেষ্টায় কতো ভালো মানুষের সঙ্গ নিয়ে হাত ধরেছি।কিন্তু তারা ভালো করে গড়ে তোলা তো দুরের কথা, উল্ঠো তিরষ্কার পেতে হয়েছে দু’হাত পুরে। তারা তাদের স্বার্থের তাগিদেই ব্যবহার করতে চায়। নতুবা বুদ্ধির সল্পতার কারণেই হোক অথবা না হয় সরলতার সুযোগ নিয়ে, অনেক সময় ধোকার মতো ফাঁদেও পরতে হয়েছে অনেক সময়। ফলে এই আমিটা মূলত ভালো মানুষ হওয়ার উপলব্দী আজো করতে পারলামনা।

ছাত্র জীবনে পড়া-লেখার পাশা-পাশিই পত্র-পত্রিকায় একটু আধটু লেখা-লেখি করতাম। এতে কারোর গুণ নিয়ে কিচ্ছু লিখলে বলা হতো এতোটা সাফাই গাওয়াটা ঠিক হয়নি। আর নারীদের নিয়ে লিখলে, বলা হয় পুরুষদের মান সম্মানন আর রইলনা। এ ছাড়াও আবার যখন কারোর বদ স্বভাব নিয়ে লেখতাম, তখন বলা হতো, ইজ্জত সম্মান ধুলায় মিশিয়ে দিয়েছি। আর যখন সমাজের গঠমান বিষয়াবলি নিয়ে সংবাদ বা বার্তা পত্রিকায় পরিবেশন করলে, অফিস-আদালত সহ নেতা-নেত্রীদের হুমকি-ধামকি তো আসতোই। গ্রাম্য মাতেব্বর সহ তরুণ-তরুণীদের ফোনালাপে প্রায়ই ক্ষত বিক্ষত হতে হতো। এরপরও বাবাজানের নিকট নালিশি আব্দারের কোনো অন্তই ছিলো না। তোমার ছেলে এই করেছে সেই করেছে। এটা ওটা না লিখলে কী বা হতো। এতে বাবাজান প্রায়ই বলে দিতেন শুনতাম, “সত্য প্রকাশ করাটা একজন বস্তু নিষ্ট সাংবাদিকেট মৌলিক অধিকার, দুর্নীতির মুখোশ একমাত্র সাংবাদিকের কলমই খোলে দিতে পারে, জন সাধারণকে সচেতন করে তুলতে। তাই বস্ত্ত নিষ্ট সাংবাদিকের কলম রোধ করা যায়না। আর যারা করে তারা হয় অপরাধি। এটা তার পেশা গত ব্যাপার। এতে আমার কিচ্ছু করার নেই” বলে অনেক অভিযোগ উড়িয়ে দিতেন। তখন তিনি ছিলেন আমার সেই সময়ের একমাত্র সাহসের যোগান দাতা ও প্রেরণার স্থপতি। আর এদিকে আমাকে বাতলে দিতেন, মানুষের মানে বাঁধে এরকম কিচ্ছু লিখতে নেই। তারপরও বাবাজানের কাছে অভিযোগের কোনো অন্তই ছিলনা।

বিকাল বেলায় মাদ্রাসা হতে এসে সমবয়সী সাথীদের নিয়ে খেলার মাঠে খেলতে গেলে অনিয়ম কেউ কিছু করে ফেললে সেখানেও বিরুধ হতো প্রায়ই। এক দিন রাগ করে মাঠ হতে চাচাতো ভাইয়ের বলটি নিয়ে আসি আজো দেইনি। একদিন মাদ্রাসায় ভূতের মুখোশ পড়ে সবাই কে ভয় দেখিয়ে অনেক কে অজ্ঞান করে দিয়ে ছিলাম। ঠিক তখনি, যখন মাস্টার সাহেব চিয়ারে বসে টেবিলের উপর টেকে ও হাত এলিয়ে মাথা ঘুমোচ্ছিলেন। এরপর মাস্টার সাহেব চারটি বেত এক সাথে মোঠো ধরে
ইয়াহুম বেতালেন। পরদিন আগেবাগে এসে মাদ্রাসার সকল বেত কুটে কুটে দুর এক গর্তে নিয়ে মাটি চাপা দেই। মাস্টার সাহেবও আর কোনো দিন এই ভাবে ঘুমও পারেননি। আমিওতো ভূতের মুখোশ পড়ার বদ অব্যাসটাও একেবারে ছেড়ে দিলাম।

১৯৭০ দশকের প্রথম দিকে রমজান ভিত্তিক দারুল কেরাত মজিদিয়া ফুলতলীর কেন্দ্র আউশ কান্দি র,প উচ্চ বিদ্যায় মসজিদে পবিত্র কুরআন শরীফ শুদ্ধ করে পড়ার জন্য ভর্তি হই। ক্লাসের ছাত্র গুলো আমাকে কেন জানি একটু আড় চোখে দেখত। তথাপি সবার সাথে এক সারিতে বসে পবিত্র কুরআন শরীফ ও তাজবিদ মাটিতে বিছানো বিছানায় বসে পড়তাম। একদিন সকল ছাত্রের পাঞ্জাবির কোণে কোণে গিট্টু দিয়ে রাখি সবার অজান্তে। ঠিক তখনই শেষ ঘন্টা বাজার সাথে সাথে হুজুর ক্লাস রোম ত্যাগ করতে না করতেই সবাই এক সাথে ছুরতে চাইলেই সবার পাঞ্জাবি ছিঁড়ে একজন আরেক জনের উপরে গড়াগড়ি করছিল। সে ঘঠনার বর্ণনা আজও দেইনি।
ওহে আরো একটি ঘটনা। বয়স অনুমান তেরো চৌদ্দ হবে, বর্ষার মাস বিরামহীন বৃষ্টি ঝরছে। ঠিক দুপুর সময় বৃষ্টি একটু বিরতি নিলে। বাবাজান আমাকে আদেশ করেন। গরু গুলো মাঠে ছড়িয়ে ঘাস খাওয়ানোর জন্যে। বাবাজানের আদেশ অমান্য করার সাহস আমার কোনো কালেই ছিলনা। তাই বাধ্য হয়ে ছোটো বড়ো ১৫-টি গরু নিয়ে মাঠে ছড়িয়ে ঘাস খাওয়ানোর জন্য নিয়ে গেলাম। তখন গুরি গুরি বৃষ্টি ঝরছিল,আরো ছিল হিমেল বাতাস। গরু গুলো ঘাস খাওয়া তো দুরের কথা। মশা ও মাছির আক্রমণে গরু গুলো এদিক সেদিক এলোপাতাড়ি ভাবে ছুটে বেড়াচ্ছে যে, আমার পক্ষে কোনো ক্রমেই তা’ সামলানো সম্ভব হচ্ছিল না । তখন উপায় না দেখে কাঁন্নার বান করে, কেঁদে কেঁদে বাড়ি এসে বাবাজান কে বলি। পাশের বাড়ির এক সমবয়সী শফিকের নামে ডাহা মিথ্যা অভিযোগ করি। সে আমাকে একা পেয়ে অনেক মারধর করেছে। বাবাজান ( একজন এস, পুলিশ অফিসার ও মুক্তি যুদ্ধা) তা’ শুনবার পর তেলে বেগুনে জ্বলে উঠেন। শফিকের মাকে ডেকে পাঠিয়ে বলেন শফিক কে তৎক্ষনাৎ সাথে করে নিয়ে আসার জন্যে। তাই মা-সহ শফিক যতা সময়ে আসলো। বাবাজান আমার দেয়া অভিযোগ শফিকের মা-কে দেওয়া মাত্রই শফিকের মা শফিক কে বাবাজানের সামনেই বেদরক মার দিলো। আর শফিক মার খেয়ে বলছে, আমি তাকে মারা তো দুরের কথা তার সাথে দেখাই করিনে। কে শুনে কার কথা! মার তো খাচ্ছেই। আমিও তখন শফিকের এহেন অবস্থা দেখে বাড়ি ছেড়ে চলে পালিয়ে বাঁচি। এটাই ছিল আমার জীবনের ডাহা মিথ্যা অযুহাত। এতেই বুঝতে পারছেন এই আমিটা কতো বড়ো খারাপ মানুষ ছিলাম এবং আছি।
আমি মানুষ টা জন্ম হতেই একজন সুখি মানুষ হিসেবে জন্মে ছিলাম। মাইজী ও বাবাজানের বড়ো সন্তান হিসেবে অতি আদরে লালিত হই। তাই সব সময়ই হাস্যজ্জল মূখে সময় অতিবাহিত করতাম। ফলে বাবাজানের অনেক আদেশ ও নিষেধ অনেক সময় , একটা হাসি দিয়ে উড়িয়ে দিতাম। তখনই বাবাজান প্রায়ই ধমক দিয়ে বলতেন “এ-একটা আস্ত উদা (নির্বোধ), এ কোন দিন পাগল হয়ে যাবে” বলে আখ্যায়িত করতেন। বাবাজানও চলে গেলেন আমাকে শোক সাগরে বাসিয়ে ওপারে ১১-ই জানুয়ারি ২০০৪ সালে। জানিনা তাঁর এ-উক্তিটার সাথে আমি নিজেই কতোটা জড়িত। আর যদি তা’ সত্যই হয়,এ- হাসির কারণে কোন দিন, পাবনার হেমায়েত পুর পাগলা গারদে যেতে হয় জানিনে ! আমার এই হাসির কারণটা ছন্দে ব্যক্ত করতে হলো-

হাসি আমার জীবন সাথী রাখছে বাঁচার রথ,
কেউ জানেনা হাসির কারণ বারণ করি হত।

তবু্ও অনুনয় করে বলছি, বাবাজান তুমি একবার এসে দেখে যাও। তোমার পাগল এই ছেলেটা তোমার হাল কতোটুকু ধরে রাখতে পেরেছে। আর কেন তা’ পারেনি। শুধু একটা বার এসে দেখে যাও! আর তা’ও জানি এটা একটা অরণ্যে রোদন মাত্র। পিতাকে হারিয়ে অনুভব করতে পেরেছি বিষাদ সিন্ধু যে কতটা গহীন। কৈ তিনি বেঁচে থাকতে তো ওতোটা অনুভব করিনি। এরকম অসংখ্য ঘটনায় জড়িয়ে আমাকে একজন খাঁটি বদ মানুষের তালিকায় অনায়াসেই লিপিবদ্ধ করে দায়ী করতে পারেন। এতে কোনো প্রকার সন্দেহ আছে বলে মনে করিনা।
সমাজ জীবনে একটু ভালো মানুষ হবার প্রত্যাশায়, ভালো মানুষের খুঁজে অসংখ্য মানুষের সাথে মিশে বন্ধুত্ব গড়ে চলেছি। চলার চেষ্টাও করেছি দেদার। চলার শুতেই অনেকটা আদর আহলাদ, স্নেহ ও ভালোবাসা ঠিকই জুটেছে। কিন্তু কিছু দিন যেতেনা যেতেই অনেকেই একটানা একটা বায়না চেয়ে বসেন। হয়তোবা তারা ব্যবহার করতে চায়। নতুবা হতে হয় সরলতার শিকার। তখন আর কিছু করার উপায় থাকেনা। তখন নিজেকে আগলিয়ে রেখে গাইতে রবিঠাকুরের সেই গানের কলি ” যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চলোরে………”। তাই এখানেও ভালো হওয়ার সু্যোগ পাওয়া গেলোনা। সাংবাদিকতা তো সেই কবেই ছেড়ে দিয়েছি। জীবনের শেষ দিকে এসে পেশা গত চেয়ারের ( নবীগঞ্জ উপজেলার আউশ কান্দি ইউনিয়নের নিকাহ ও তালাক রেজিস্ট্রার হিসেবে) দায়িত্বের পাশাপাশি সামাজিক দায়বদ্ধতার ফাঁক- ফুঁকরে একটু আধটু লেখা- লেখি করি। মনকে একটু চাঙ্গা করে রাখার জন্যে, সাহিত্যের বিভিন্ন পরতে বিচরণ করতে গিয়ে অনেক সময় সভা- সমিতি, আড্ডা বা সেমিনারে যেতে হয়। এতে সময়ে অসময়ে বাড়ি ফিরতে অনেক রাত হয়। দর্জায় এসে কড়া নাড়তেই স্ত্রীর রূঢ় কন্ঠে শুনতে হয়, এতোটা রাত কোথায় কাটিয়ে এসেছ ? এতেই বুঝতে পারছেন,চরিত্র নিয়ে স্ত্রীর সন্দেহের তীরের লক্ষ্য হতেই রীতিমত রক্ষা পেলামনা। জীবনের সবচেয়ে আপন সঙ্গিনীর মুখে শুনতে হলো চরিত্র গত অপবাদ। তখন সমাজের চারপাশের মানুষ গুলো আমাকে ভালো বলবে, সে আশা করাটাও একটা বোকামি ছাড়া আর কী হতে পারে। পাঠক আপনারাই বলুন ?
লেখা লেখির জগতেও তাই অনুরূপ। লেখা দিয়ে যাকেই তেল মালিশ করতে পারবেন। সেই ভালো খেতাবটা সুন্দর করে সাফল্যের সাফাই দিবেন। আর লেখাটা যার মতের বিরুদ্ধে চলে যাবে, তো খাইছেন। ভালো বলা তো দুরের কথা, নাক চিট কিয়ে ও ভ্রুকুঞ্চিয়ে আড়ালে গালি দেয়। অভিশ্ত, কুলাঙ্গার, বাজে লোক, ইতর ও বদমায়েশ এ- জাতীয় গালিতে যতো শব্দ ব্যবহার হয়, সবটাই ছুড়তে থাকে । যদিও লেখাটি বাস্তবতার আলোকে, ন্যায় ও সত্যতার নিরিখে যতই ক্ষমতাধর ও পরিশুদ্ধ লিখা হোকনা কেন।
এছাড়াও বন্ধু মহলে যাদের মন যুগিয়ে যদি চলি, তখন বলেন বন্ধুটি মন্দ নয়। অার যদি কোনো বন্ধুর ভুল ধরা পরলে তা’ সংশোধন করতে বা দেখিয়ে দিতে চাইলে তো খাইছেন ধরা। তখন অনেক বন্ধু এমনই রয়েছে যে, উত্তরে অনায়াসেই বেড়িয়ে আসে পাণ্ডিত্যের বাখান সহ আলোচনা ও সমালোচনার ঝর বিপদসীমার উপরে মুখোমুখি হত হয়। বন্ধুত্ব টিকিয়ে রাখা তো দুরের কথা, শত্রু হতেও বিচিত্র নেই। তার সাথে গালিতো আছেই। যার ফলে এখন আর এসবের তোয়াক্কা করিনা। এসব আজকাল গাঁ সোয়া হয়ে গেছে। বন্ধু মহলে বা যে কেউ যদিও বলেন এই মিয়া বাজে লোক, বদমায়েশ, দুষ্ট বা খারাপ ইত্যাদি ইত্যাদি। এরূপ যে কোনো গালির শব্দ ব্যবহার করলে এখন আর গাঁয়ে বাঁধে না। কারণ আমি অতি ভালো কাজ করলেও অভিশাপ তো পাবোই। সুতরাং এটা আমার প্রাপ্য হয়ে গেছে। তবুও পাঠকের হাতে একটা ভালো লেখা তুলে দেবার প্রত্যাশায় অনেক সময় চেষ্টা করি। তথাপি ভয় কাটিয়ে উঠতে পারিনি, লেখাটি যদি পাঠকের রুচির উল্টো হয়ে যায়। তখন তারা অকপটে বলে দেবেন জঘন্য, বাজে বা পঁচা বলে চৌদ্দ গোষ্ঠী হাতিয়ে গালি দিবেন। এতেই বুঝতে পারছেন, একটা ভালো কাজের স্বীকৃতি কী ভাবে আসে ? যেন ‘তাদের হবু ‘বিয়ের গোপন হাঁড়ি হাটে ভেঙে দিয়েছি’। এই জন্য অনেকেই চলাফেরাসহ কথা বলা ছেড়েই দিয়েছেন। অর্থাৎ সম্পর্ক একেবারে শিথিল করে দিয়েছেন। ভাবলাম এতে ভালোই হলো। অন্তত তাদেরকে নিয়ে আড্ডায় যাওয়া আসা ও চায়ের দোকানে বা নাস্তায় যে পরিমাণ খরছ হতো। সেই পয়সাটা অন্তত এখন হতে সেইভ হয়ে গেলো। আনন্দ হলো আমার সামনে অন্য কারোর আলোচনা ও সমালোচনা করার কোনো সুযুগই আর রইলো না। বদ বা খারাপ মানুষ হওয়ার কারণে খরচ ও তাদের নিয়ে সময় অপচয় একেবারে বন্ধ হয়ে গেলো। এখন যা-ই করি মনখোলে লেখা লেখি, চলাফেরাসহ ইচ্ছার বহি প্রকাশের কোনো বাঁধা আর রইল না। এরপরও যদি সমালোচিত হই।তবে নিজেকে সামলিয়ে বদ বা খারাপ মানুষের অভ্যাসের প্রসংশা না করেই পারছিনা। এই জন্যেই যে, আলোচনা ও সমালোচনার সম্মখিন হয়, ওই ব্যক্তিগন। যাদের জ্যুতি বা খ্যাতি দমিয়ে রাখা যায় না। তাই এই আমিটা যে কতোই খারাপ, পাঠকের বুঝতে বাকি আছে বলে মনেই হয়না। তাই আবারও বলছি ‘ ভালো হতে পয়সা লাগে না ‘ শুধু এই আমিটা ছাড়া। তাই আমি আর ভালো হতে পারলাম না।

লেখক: কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক